Zero Investment Business:- আজকের দিনে বহু যুবক যুবতীর চাকরির দিক থেকে নজর সরে এসে ব্যবসা (Business) এর দিকে ঝোঁক বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মূল কারণ হলো ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত রোজগারের সুযোগ। তবে অনেক সময়ই বিভিন্ন ব্যবসার শুরু করার ক্ষেত্রে যে মোটা অংকের মূলধনের (Investment) প্রয়োজন হয়, তা মজুদ না থাকার কারণে অনেকেই পিছিয়ে যান ব্যবসা থেকে।
তবে আপনি কি জানেন, আপনার একটা টাকা বিনিয়োগ না করেও আজকের দিনে একাধিক ব্যবসার সুযোগ রয়েছে? হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন। ব্যবসা করবেন তাও আবার জিরো ইনভেস্টমেন্টে।
এমনই এক দুর্দান্ত ব্যবসার আইডিয়া (Business Idea) আমরা আজকের প্রতিবেদনের মাধ্যমে আপনার সামনে তুলে ধরতে চলেছি। তাই নিজের বেকারত্ব ঘুচিয়ে অথবা চাকরি কিংবা গৃহস্থালির কাজের পাশাপাশি যদি অতিরিক্ত রোজগারের ইচ্ছা থেকে থাকে, তাহলে বেছে নিতে পারেন বিনিয়োগ ছাড়া এই দুর্দান্ত ব্যবসার সুযোগকে।
বিনা পুঁজিতে ব্যবসা
ঘরে বসেই স্মার্টফোনের মাধ্যমে কোনো রকম দক্ষতা বা শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়াও অনলাইনে বিভিন্ন ব্যবসা শুরু করা যায়। এর মধ্যে বর্তমানে অধিক পরিমাণে জনপ্রিয় হলো অনলাইন রিসেলিং (Reselling) ব্যবসা। সাধারণত ঘরের গৃহবধুরা গৃহস্থালির কাজকর্ম সামলে নিয়ে নিজের অবসর সময়মতো এই ব্যবসা করতে পারেন। এর ফলে নিজেদের হাত খরচের মত রোজগার করা সম্ভব।
অনলাইন রিসেলিং ব্যবসা
রিসেলিং (Online Reselling), কথার অর্থ হলো নিজের কাছে তৈরি না করে অন্যের বানানো পণ্য বাজারে বিক্রি করা। বর্তমানে অনলাইনে রিসেলিং ব্যবসার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ক্ষেত্রে আপনাকে নিজের কাছে গুদামঘর তৈরি করে পণ্য সংগ্রহ করতে হবে না। আপনি সরাসরি অনলাইন মাধ্যমে সেলার এবং গ্রাহকের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের কাজ করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে সেলারের কাছ থেকে পণ্য নিয়ে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
Read More:- জিও সিম কার্ড থাকলেই পাবে, ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত! কিভাবে পাবে দেখে নাও।
এই কাজ করে বর্তমানে প্রচুর মহিলা হাজার হাজার টাকার রোজগার করছেন। এটি শুধুমাত্র গৃহবধূ মহিলাদের জন্যই নয়, বরং স্কুল কলেজের পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তির সকলেরই রোজগারের একটি বিকল্প হতে পারে। এই ব্যবসা হাতের মোবাইল ফোনটির মাধ্যমে করা সম্ভব।
অনলাইন রিসেলিং ব্যবসা করে রোজগার
অনলাইন রিসেলিং (Reselling Business) এর ক্ষেত্রে প্রতিদিন গড়ে ১০টি পণ্য বিক্রি করতে পারলে, প্রতি পণ্যে আপনার লাভের মার্জিন এর উপর রোজগারের পরিমাণ নির্ভর করবে। অর্থাৎ আপনি যদি প্রত্যেকটি পণ্যে ১৫০ টাকা করে লাভের মার্জিন রাখতে পারেন, তাহলে সহজেই মাসে আপনার রোজগারের পরিমাণ হবে ৩৫,০০০ টাকা। এই টাকা দিয়ে নিজের হাত খরচের পাশাপাশি পরিবারের পাশেও নিজের অর্জিত অর্থ দিয়ে সাহায্য করতে পারেন আপনি।
বিনা পুঁজিতে ব্যবসার সুবিধা
সম্পূর্ণভাবে বিনিয়োগ ছাড়া এই অনলাইন রিসেলিং ব্যবসার ক্ষেত্রে একাধিক সুযোগ-সুবিধা পাবেন আপনি। যেমন-
১) জিনিসপত্র বা আপনার বিক্রয় করা পণ্য বিক্রয়ের জন্য আপনার কাছে কোন গুদাম ঘরে কিনে এনে সেই পণ্য গচ্ছিত করতে হবে না।
২) আগে থেকেই কিনে স্টোর করে রাখার প্রয়োজন নেই।
৩) ঘরে বসে বসে হাতে থাকা মোবাইল ফোনের সাহায্যেই নিজের অবসর সময়ে এই ব্যবসা করা যেতে পারে।
৪) নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পেজ যেমন Whatsapp, Facebook কিংবা ইনস্টাগ্রাম (Instagram) আইডির মাধ্যমে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
৫) অফিস বা সাধারণ ব্যবসার মতো নির্দিষ্ট সময়ে কাজ করতে হবে, এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। নিজের সময় মত পার্টটাইম অথবা ফুল টাইম অপশনে আপনি এই কাজ করতে পারেন।
৬) প্রতিটি পণ্য বিক্রয় করে আপনার যেমন কোন রকম ইনভেস্টমেন্ট এর প্রয়োজন হচ্ছে না, তেমনি মাস গেলে মোটা অংকের লাভ করাও সম্ভব হচ্ছে।
রিসেলিং এর জন্য প্রয়োজনীয় অ্যাপ
বর্তমানে বাজারে একাধিক অ্যাপের মাধ্যমে রিসেলিং প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আপনি আপনার সুবিধামতো Meesho, GlowRoad, Shop101 এর মত বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করে রিসেলিং শুরু করতে পারেন এবং নিজের সোশ্যাল মিডিয়া সাইটের মাধ্যমে সরাসরি গ্রাহকের কাছে পৌঁছে যেতে পারেন।
কিভাবে এই বিনা পুঁজির ব্যবসা শুরু করবে?
সম্পূর্ণ বিনা মূলধনের এই ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রথমেই আপনাকে অনলাইনে উপরে উল্লেখিত রিসেলিং অ্যাপ এর মত যে কোন অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে।
এরপর সেখানে থাকা বিভিন্ন জিনিসের মধ্যে থেকে আপনি যে জিনিসটির ব্যবসা শুরু করতে চাইছেন, সেই জিনিসটি বেছে নিয়ে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া (Social Media) সাইটে তার বিজ্ঞাপন (Advertisement) দিতে হবে। মূলত পণ্য গুলির ছবি ও বিবরণ কাস্টমারদের সাথে শেয়ার করতে হবে।
এরপর আপনি কোন অর্ডার পেলে ওই অ্যাপ থেকেই সরাসরি কাস্টমারের কাছে জিনিসটি পাঠিয়ে দিতে পারবেন।
ব্যবসা শুরু করার আগে প্রয়োজনীয় টিপস
যে কোন ব্যবসার মতো এই ব্যবসার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট পরিমাণে সতর্ক থেকে আপনাকে কাজ করতে হবে। আপনি অনলাইন মাধ্যমে যেমন গ্রাহকদের কাছে পৌঁছতে সক্ষম হবেন, তেমনি অর্ডার পাওয়ার পর ফুল পেমেন্ট (Payment) ছাড়া কাজ করবেন না। এছাড়াও ভালো মানের উচ্চ চাহিদাযুক্ত প্রোডাক্ট (Product) বিক্রি (Sale) করে আপনার গ্রাহকদের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা গড়ে তুলতে হবে।

