মাসে ৩০ হাজার টাকার বেশি আয়! এই মেশিনটা কিনে অনলাইনে ব্যবসা করো। — Tshirt Making Online Business

Tshirt Making Online Business in West Bengal: আপনি কি ভাবছেন ব্যবসা শুরু করবেন? তাহলে বেশ কয়েকটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে। ব্যবসা শুরুর আগে কিছু কিছু জিনিস আগে থেকে ঠিক করে নিতে হয়। তা না হলে ব্যবসা দাঁড় করানো এবং তার থেকে আয় করা খুব মুশকিল হয়ে যায়।

যেকোনো কিছু নিয়ে ব্যবসা শুরুর আগে প্রথমে ঠিক করতে হবে জায়গা। সেই জায়গায় কোন দ্রব্যের চাহিদা বাজারে কতটা আছে সেটি ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তবেই দ্রব্যটি নির্বাচন করতে হবে। এই ব্যবসা শুরু করার জন্য কতটা পুঁজি বিনিয়োগ করতে হবে এবং এর থেকে মুনাফা কতটা সেটা ভালোভাবে বুঝে নিতে হবে।

যে দ্রব্যটি নিয়ে কাজ করতে চলেছেন সেই দ্রব্যটির মার্কেটিং সম্বন্ধেও আপনাকে খুব ভালোভাবে জানতে হবে। কারণ বর্তমান প্রতিযোগিতার যুগে ইউনিক প্রোডাক্ট (Unique product) বলে খুব বেশি নেই। যে দ্রব্যটি নিয়ে আপনি কাজ করবেন ভাবছেন সেটি নিয়ে আরো পাঁচজন কাজ ইতিমধ্যে করছে। তার মানে এই নয় যে আপনি কাজ করলে আপনার ব্যবসা দাঁড়াবে না।

আপনাকে বাজারে চলছে এরকম দ্রব্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে হবে তবে মার্কেটিং স্ট্যাটেজি আপনাকে আর পাঁচ জনের থেকে আলাদা করতে হবে যাতে আপনার প্রোডাক্টকে মানুষ চেনে এবং তার ভিত্তিতে আপনার কোম্পানি বা ব্র্যান্ড কেউ লোকের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। তার একমাত্র পদ্ধতি হলো এডভারটাইজমেন্ট (Advertisement) এর মাধ্যমে মার্কেটিং (Marketing) করা।

Also Read— 

আজ এই রকমই একটি ব্যবসা নিয়ে এই প্রতিবেদনে আলোচনা করতে চলেছি। যদি ওই ব্যবসাটি বাজারে খুব বেশি পরিমাণে লোকে করছে না। বলা যেতে পারে এটি প্রায় নতুন। তবে আপনার এলাকাতে এই ব্যবসাটি খুব কম লোকজন করলেও পুরো পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষে আপনি প্রথম নন যিনি এই ব্যবসাটি শুরু করতে চলেছেন।

তবে তার মধ্যেও ব্যবসাটির মধ্যে নতুনত্ব অভিনবত্ব আছে। আপনাকে ব্যবসাটি নিজের মতো করে শুরু করে সেটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। যদি ভালোভাবে শুরু করতে পারেন তাহলে প্রথমে যত কমই হোক না কেন, খুব বেশি না খেটেও মাসে কম করে ৩০ হাজার বা তার বেশি উপার্জন আপনি করতে পারবেন চোখ বন্ধ করে।

কম পুঁজি বিনিয়োগে বেশি আয়ের ব্যবসাটি সম্বন্ধে জানুন

নতুন এই ব্যবসাটি হল টি-শার্ট প্রিন্টিং মেশিনের মাধ্যমে জামা টি শার্ট নেতাজী বিভিন্ন ডিজাইন (Design) ও সিনারি প্রিন্ট (Scenery print) করা। প্লেন জামা বা টি-শার্ট (Plain T-Shirt/ Shirt) এর উপর যদি কোন ছবি প্রিন্ট করা যায় তাহলে তার সৌন্দর্য বহুগুণে বেড়ে যায়, দেখতে ভালো লাগে।

সাধারণ একটি টি-শার্ট বা জামা বা যেকোনো ধরনের পোশাক সাধারণ থেকে অসাধারণ পোশাকে পরিণত হয়। কারণ এই সামান্য একটি প্রিন্ট পোশাকটির গ্রহণযোগ্যতা বহুবনে বাড়িয়ে দেয়। এই কাজটি করার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র আপনাকে ডিজাইন বা প্রিন্টিস কাগজে (printing paper) নিতে হবে জামাটি বা পোশাকটি মেশিনের মধ্যে রাখতে হবে তার ওপর ডিজাইনটি বসিয়ে মেশিনটি অপারেট করলেই কাগজে প্রিন্টটি পোশাকের মধ্যে ছেপে যাবে।

এতে না লাগবে কোন পরিশ্রম না লাগবে কোন অতিরিক্ত কর্মচারী, মেশিনটি বিদ্যুৎ চালিত তবে তার জন্য অতিরিক্ত ভোল্টেজের (Voltage) বিদ্যুৎ দরকার নেই। বাড়িতে যে পরিমাণ ইলেকট্রিক লাগে সেই ইলেকট্রিক (Electric) এই মেশিনটি ভালোভাবে চালানো যাবে। ইলেকট্রিক খরচও খুব বেশি লাগবে না।

ব্যবসাটি কিভাবে শুরু করবেন?

যেকোনো ব্যবসা শুরুর ক্ষেত্রে প্রথমে যেমন আপনাকে দেখে নিতে হবে দ্রব্যটির চাহিদা এবং গ্রাহকদের টেস্ট। ‌ কিন্তু এই ব্যবসার ক্ষেত্রে আপনি বাড়িতে বসেই সরাসরি ব্যবসার জায়গা থেকে পোশাকটি বিক্রি করতে পারবেন অথবা অনলাইন ব্যবস্থার মাধ্যমেও সারা ভারত জুড়ে আপনার দ্রব্যটি পৌঁছে দিতে পারবেন। অর্থাৎ এই ব্যবসার ক্ষেত্রে এলাকা লোকাল থেকে শুরু করে বৃহত্তর হতে পারে। তার জন্য লাগবে মার্কেটিং এর কৌশল।

এই ব্যবসাটি শুরু করার জন্য অল্প কিছু খুঁজে বিনিয়োগ করলেই মেশিনটি আপনি আপনার ব্যবসার জায়গায় নিয়ে আসতে পারবেন এবং অল্প কিছু পরিকাঠামগত ব্যবস্থা করলেই আপনি ব্যবসাটি অতীত সহজে শুরু করতে পারবেন। তবে প্রথমে আপনার ব্যবসার দ্রব্যটি মানুষের কাছে পৌছে দিতে হবে যাতে খরিদ্দার আসে এবং আপনার দ্রব্যটির চাহিদা মানুষের কাছে পৌঁছতে পারে।

এই ব্যবসাটি সত্যি কি লাভজনক?

টি-শার্ট প্রিন্টিং ব্যবসাটি যদি ভালোভাবে বোঝা যায় তাহলে বলা যাবে যে এটি একটি লাভজনক ব্যবসা। কারণ, এর জন্য যে যন্ত্রটি কিনতে হবে তা খুব কম পুঁজির মধ্যেই হয়ে যাবে। এর জন্য আলাদা করে ঘর ভাড়া আপনার লাগবে না। কারণ মেশিনটি খুব বড় নয়।

তবে যদি একটি ঘর আলাদা করে সেটআপ করে নেওয়া যায় তাহলে ব্যবসাটি করতে সুবিধা হবে। যদিও তার আয়তন খুব বেশি বড় লাগবে না। আপনি আপনার বাড়ি থেকেই ব্যবসাটি শুরু করে ছোট থেকে যখন বড় জায়গায় পৌঁছে যাবেন তখন আলাদা করে কোন দোকান বা ওয়ার্কশপ নিতেই পারেন।

প্লেন কোন টি শার্ট বা যেকোনো পোশাক আপনি কম দামে নিজে কিনেও তার উপর প্রিন্ট করে বেশি দামে বিক্রি করতে পারেন অথবা গ্রাহক যদি কোন পোশাক নিয়ে আসে তার উপর প্রিন্ট করেও আপনি ভালো রকম মূল্য ধার্য করতে পারেন। এতে আপনাকে পোশাকের জন্য টাকা ব্যয় করতে হলো না শুধুমাত্র প্রিন্ট করে দিয়েই আপনি ভাল রকম টাকা রোজগার করতে পারবেন।

বিভিন্ন ধরনের ছবি বা সিনারি বা কোন ডিজাইন আপনি আপনার ফোন বা কম্পিউটার থেকে প্রিন্ট করে সেটিকে মেশিনে অপারেট করলেই পোশাকের মধ্যে সেটি উঠে যাবে অথবা গ্রাহক নিজেও কোন ডিজাইনে আপনাকে দিলে সেটিও আপনি করে দিতে পারবেন এতে আপনার অতিরিক্ত খাটনিও বাঁচবে।

অনলাইনে (Online) যদি দ্রব্যটি আপনি কোন স্টোরের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারেন তাহলে অনেক বেশি মুনাফা অর্জন করতে পারবেন। তবে ডেলিভারির ব্যবস্থা আপনাকে রাখতে হবে। এভাবে কম খাট নিতে কম পুঁজি বিনিয়োগ করে সারা ভারতজুড়ে আপনি আপনার ব্যবসাটি চালাতে পারবেন এবং অনেক রোজগার করতে পারবেন। তাই ব্যবসাটি যথেষ্ট লাভজনক।

ব্যবসাটিতে আনুমানিক খরচ কি রকম

— টি শার্ট প্রিন্টিং ব্যবসাটি শুরু করার জন্য প্রথমেই যে মেশিনটি লাগবে সেটি হল হিট প্রেস মেশিন। যার আনুমানিক ক্রয়মূল্য ১০০০০ থেকে ২০০০০।

— যদি আপনি ফাঁকা টি শার্ট কেনেন তাহলে তার বাজারে ক্রয় মূল্য হতে পারে ৫০ থেকে ১৫০ বা ২০০ টাকা প্রতি পিস।

— ডিজাইনের জন্য সাধারণ কাগজ এখানে চলবে না তার জন্য সাবলিমেশন পেপার লাগবে যার প্রতিটি শীটের দাম ৫ থেকে১০ টাকা।

— কালির জন্য আনুমানিক খরচ এককালীন আপনাকে করতে হবে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা প্রতিটি সেট। আপনি একবার কিনলে এটি অনেক বার প্রিন্ট করতে পারবেন।

— ডিজাইন তৈরি করার জন্য কম্পিউটার ল্যাপটপ বা মোবাইল যা আছে সেটা দিয়েই আপনার কাজ হয়ে যাবে আর যদি নতুন কিনতে চান তাহলে তার জন্য অবশ্যই আপনাকে টাকা বিনিয়োগ করতে হবে, তবে সেটিও নির্ভর করছে আপনি কি রকম মডেল চান তার উপর।

— ডিজাইন সফটওয়্যার যদি আপনি ব্যবহার করেন তাহলে যদি ফ্রি ব্যবহার করেন তাহলে তার জন্য কোন টাকা লাগবে না কিন্তু যদি প্রো ভার্সন আপনি নেন তাহলে আপনাকে মাসে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত সাবস্ক্রিপশন ফি দিতে হবে।

— আনুমানিক ব্যবসাটি শুরু করার জন্য আপনাকে ১৪ থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে খরচ করলেই আপনি ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন। কিন্তু এর থেকে যথেষ্ট মুনাফা আপনি অর্জন করতে পারবেন যদিও সেটি নির্ভর করছে কতটা গ্রাহক আপনার কাছে আসছে তার উপর।

মার্কেটিং এর জন্য কি কি ব্যবস্থা করতে হবে?

বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়া ও ডিজিটাল যুগে ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করার জন্য তার প্রসারের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া একমাত্র ভরসা। আপনি নিজের থেকেই এই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আপনার ব্যবসাটিকে অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়ে নিতে পারবেন তার জন্য প্রথম মিডিয়া টি হল Facebook, Instagram ইত্যাদি সোশ্যাল মিডিয়াতে পেজ তৈরি করে Ads চালিয়ে (organic or paid) আপনার দ্রব্যটি সম্বন্ধে মানুষকে জানাতে পারেন এবং কাস্টমার পেতে পারেন।

— দ্বিতীয় মার্কেটিং এর পদ্ধতি হলো whatsapp business, telegram business channel এর মাধ্যমে ব্যবসা।

— কোন অনলাইন স্টোর (wooCommerce or shopify) বানিয়ে সেখানে আপনার তৈরি করা দ্রব্যগুলির সুন্দর ছবি লাগিয়ে সেগুলি সম্বন্ধে ছোট করে বিশ্লেষণ দিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন।

— এছাড়াও আপনার স্থানীয় এলাকায় যে সমস্ত ছোট বড় দোকান আছে তাদের থেকেও অর্ডার নিয়ে কাজ করতে পারেন।

— যদি নিজের কোন দোকান থাকে সেখানেও আপনি বিক্রি করতে পারেন অথবা আপনার ব্যবসার জায়গা থেকেও খরিদ্দাররা এসে আপনার দ্রব্যটি কিনে নিয়ে যেতে পারে।

— বর্তমান যুগে অফার খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ‌ আপনি যদি আপনার দ্রব্যের সঙ্গে কোন অফারের ব্যবস্থা রাখেন তাহলেও আপনার দ্রব্যটি খুব ভালো ব্যবসা করবে।

সবশেষে বলা যায়, যে কোন ব্যবসার ক্ষেত্রেই ঝুঁকি আছে। এই ব্যবসাটি সাধারণভাবে আর পাঁচটি ব্যবসার থেকে আলাদা হলেও এবং বাজারে এই দ্রব্যটির চাহিদা থাকলেও আপনার মার্কেটিং স্ট্রাটেজের ওপর ভিত্তি করে দ্রব্যটির বিক্রি বা আপনার ব্যবসার বৃদ্ধি নির্ভর করবে। তাই ব্যবসার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সচেতনতা নিয়ে আপনাকে কাজ করতে হবে। তবে পরিষেবা যদি ভালো দেন তাহলে ব্যবসা বৃদ্ধি পেতে অসুবিধা হবে না।

Verified Job

Verified Job — পশ্চিমবঙ্গসহ সমগ্র দেশের চাকরি ও ব্যবসা সংক্রান্ত নির্ভরযোগ্য এবং ভেরিফাইড তথ্য প্রদানকারী একটি শীর্ষস্থানীয় জব নিউজ পোর্টাল। এখানে শুধুমাত্র সঠিক ও বিশ্বাসযোগ্য খবর প্রকাশিত হয়, কোনো ভ্রান্ত বা অপ্রাসঙ্গিক তথ্য নয়। গত ৬ বছর ধরে আমরা ডিজিটাল মিডিয়ার মাধ্যমে পাঠকদের নির্ভরযোগ্য সংবাদ দিয়ে আসছি।