Mobile Cover Business: নিজের একটি ব্যবসা তৈরি করবেন ভাবছেন? তবে জানেন কি, বর্তমানে ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা অনেক কম থাকলেও, ট্রেন্ডিং (Trending) বিষয় নিয়ে ব্যবসা শুরু না করলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন?
তাই আপনাদের জন্যই আজকের প্রতিবেদনের মাধ্যমে এমন একটি দুর্দান্ত ব্যবসার আইডিয়া জানাতে চলেছি, যেখানে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণে চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও এই চাহিদার অভাব হবে না। ব্যবসার ক্ষেত্রে অবশ্যই এমন বিষয় বেছে নেওয়া উচিত, যার চাহিদা কোনদিন বন্ধ হবে না। এমনই এক দুর্দান্ত ব্যবসার আইডিয়া হল মোবাইল ফোনের কভার তৈরির ব্যবসা।
মোবাইল ফোন এখন গ্রাম থেকে শহর — গরিব থেকে বড়লোক সবার মধ্যেই বহুল পরিমাণে উপলব্ধ হয়ে গিয়েছে। আর ফোন কেনার পাশাপাশি সেই ফোনের কভার কেনাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আর একদমই না ভেবে আজকের প্রতিবেদন থেকে জেনে নিন মোবাইল কভার তৈরির ব্যবসার খুঁটিনাটি।
মোবাইল কভার বানানোর ব্যবসা কেন এত লাভজনক?
মোবাইল এবং নিত্য নতুন মোবাইলের কভারের চাহিদা বর্তমানে বিপুল পরিমাণে রয়েছে এবং ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। পুরুষ থেকে মহিলা সকলেই নিত্যনতুন মোবাইল কভার কিনে নিজের পুরনো মোবাইল থেকেও নতুন করে সাজিয়ে তুলতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
এর পাশাপাশি নিত্যনতুন মোবাইলের (Smartphone) লঞ্চের সাথে সেই ব্র্যান্ডের কভারের চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই মোবাইল কভার বিক্রির ব্যবসায় অদূর ভবিষ্যতে কোন লোকসানের সম্ভাবনা নেই। এই কারণেই আপনি যদি কোন দুর্দান্ত এবং সহজ পদ্ধতির ব্যবসা খুঁজে থাকেন, তাহলে মোবাইল কভার এর ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
মোবাইল কভার ব্যবসার সুবিধা
১) বর্তমানে বাজারে বিপুল পরিমাণে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের (Brand) মোবাইলের কভারের চাহিদা রয়েছে।
২) নিত্য নতুন স্মার্টফোন লঞ্চের সাথে সেই ব্র্যান্ডের কভারের চাহিদা বাড়তে থাকে।
৩) বিভিন্ন ডিজাইনের সাথে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল কভার তৈরি হওয়ার কারণে এর ভ্যারাইটি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। অর্থাৎ সল্প দাম থেকে অধিক দামের মোবাইল কভার বিক্রি করা যেতে পারে।
৪) অনলাইন এবং অফলাইন উভয়ের মাধ্যমেই মোবাইল কভারের বিপুল সংখ্যক গ্রাহক পাওয়া যায়।
৫) কোনরকম অতিরিক্ত ডিগ্রী বা দক্ষতা কোন কিছুটি প্রয়োজন হয় না মোবাইল কভার ব্যবসা শুরু করার জন্য।
৬) ছোট পরিসরে হোলসেল মার্কেট থেকে মোবাইল কভার কিনে বিক্রি করা থেকে শুরু করে নিজের প্রিন্টিং মেশিনের মাধ্যমে মোবাইল কভার তৈরি করার সুবিধা রয়েছে এই ব্যবসায়।
ব্যবসার শুরুর প্রাথমিক টিপস
মোবাইল কভার বিক্রি করার জন্য বর্তমানে কোন কোন ধরনের মোবাইল কভারের চাহিদা রয়েছে, তা জেনে নেওয়া প্রয়োজন। বর্তমানে বাজারে মূল ৫ ধরনের মোবাইল কভার বিপুল পরিমাণে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এগুলি হল-
- ১) সিলিকন কভার,
- ২) প্রিন্টেড কভার,
- ৩) শক্ত এবং মজবুত হার্ড কভার,
- ৪) লেদার কভার,
- ৫) কাস্টম ডিজাইন কভার।
ইনভেস্ট কত লাগবে?
যেকোনো ব্যবসার শুরু করতেই প্রাথমিকভাবে কিছুটা পরিমাণ বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়। মোবাইল কভারের ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রেও আপনাকে প্রাথমিকভাবে একটি জায়গা এবং কিছু সরঞ্জামের ব্যবস্থা করতে হবে।
সেইক্ষেত্রে আপনি একটি দোকান ঘর বানাতে পারেন অথবা একটি ছোট জায়গার মধ্যে নিজের প্রিন্টিং মেশিনের সাহায্যে মোবাইল কভার তৈরি করতে পারেন। হোলসালে মোবাইল কভার বিক্রি অথবা নিজে তৈরি করে কভার বিক্রি দুটি বিকল্পের প্রয়োজনীয় খরচ (Investment) সম্পর্কেই নিচে আলোচনা করা হলো-
১) কিনে এনে মোবাইল কভার বিক্রি-
ছোটপরিসরের মোবাইল কভারের ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে আপনি হোলসেল মার্কেট থেকে প্রচুর পরিমাণ মোবাইল কভারের স্টক তৈরি করে নিজের দোকানে রেখে বিক্রি করতে পারেন। এই ক্ষেত্রে আপনাকে শুধুমাত্র একটি দোকান ঘরের ব্যবস্থা করতে হবে।
সেই দোকানঘরটি অবশ্যই বিপুল পরিমাণ মোবাইল কভারের স্টক দিয়ে ভরিয়ে দিতে হবে। এর ফলে গ্রাহকেরা আপনার দোকানে এসে নিজেদের মোবাইল কভার না পেয়ে ফিরে যাবেন না।
২) নিজে মোবাইল কভার বানিয়ে বিক্রি
আপনি যদি নিজের কাস্টমাইসড মোবাইল কভার বানানোর জন্য আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই প্রিন্টিং মেশিন, হিট প্রেস মেশিন, কম্পিউটার এবং ডিজাইনের বিভিন্ন সফটওয়্যার, সিলিকন কভারের স্টক, একটি দোকান বা কভার রাখার জায়গা ইত্যাদির ব্যবস্থা করতে হবে।
বিনিয়োগের হিসাব- হোলসেল থেকে মোবাইল কভার কিনে বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ২০,০০০/- টাকা থেকে ৩০,০০০/- টাকার মধ্যে খরচ করতে হবে। অপরদিকে নিজের প্রিন্টিং কভার ব্যবসা সুরুর ক্ষেত্রে অন্ততপক্ষে ৬০,০০০/- টাকা খরচ করতে হবে।
আয়ের পরিমাণ
মোবাইল কভার বিক্রির ব্যবসায়ী, প্রাথমিকভাবে একটি কভার তৈরি জন্য ৩০-৫০ টাকা খরচ হয়ে থাকে। এই এক একটি কভার ন্যূনতম ১০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়। অর্থাৎ প্রতিটি কবার পিছু প্রায় ১০ গুন লাভ করার সুযোগ থাকে বিক্রেতাদের কাছে।
এই ভাবেই যদি আপনি বিভিন্ন অনলাইন এবং অফলাইন মার্কেটিং স্ট্রাটেজি ব্যবহার করে দিনে ১৫ টি কভার বিক্রি করতে পারেন, তাহলে প্রতিমাসে আপনার আয়ের পরিমাণ ৫০,০০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

