Home Income Business: বর্তমান সমাজে অনেক মানুষই ব্যবসা করার দিকে আগ্রহী হয়েছে। কেউ কেউ আবার চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করে সচ্ছল জীবন যাপন পেতে চায়। আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে বিস্তারিতভাবে তথ্য দেবো যে মাশরুম চাষ করে কিভাবে মাসে মোটা টাকা আর্নিং করা যায়। মাশরুম চাষের বিষয়ে যে সকল ব্যক্তিরা আগ্রহী তারা আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
কেন মাশরুম চাষ এখন এত জনপ্রিয়
মাশরুম হল একটি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। প্রোটিনে ভরপুরের জন্য এই মাশরুম তাই সকল মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এই মাশরুম যে শুধু সুস্বাদু খাবার তা নয় এটি শরীরের পক্ষেও অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার। ভিটামিনের পাশাপাশি মাশরুমে থাকে, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ বহু রোগের নিরাময় করে।
রেস্টুরেন্ট, হোটেল, ফাস্টফুড সেন্টার, সুপার শপ, এমনকি অনলাইন ফুড ডেলিভারি সার্ভিসেও মাশরুমের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই কারণে আপনি যদি সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে এই ব্যবসা শুরু করার জন্য আগ্রহী হয়েছেন তাহলে একদম সঠিক কাজটি করতে যাচ্ছেন।
এখন আমরা বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, হোটেল, ফাস্টফুড সেন্টার, সুপার শপ, এমনকি অনলাইন ফুড ডেলিভারি সার্ভিসেও মাশরুমের ব্যবহার দেখতে পাই। এই কারণে যদি সঠিকভাবে মাশরুম চাষ করা যায় তবে মাশরুম বিক্রি করে প্রতিমাসে ভালো টাকা আর্নিং করা যেতে পারে।
কোন ধরনের মাশরুম সবচেয়ে বেশি লাভজনক?
বাজারে বিভিন্ন ধরনের মাশরুম পাওয়া যায় যেমন
- ওয়েস্টার (Oyster) মাশরুম।
- বাটন (Button) মাশরুম।
- মিল্কি (Milky) মাশরুম।
- শিটাকে (Shiitake) মাশরুম।
তবে বিভিন্ন ধরনের মাশরুম পাওয়া গেলেও ওয়েস্টার (Oyster) মাশরুমই হল সব থেকে বেশি লাভজনক ও সহজে ই চাষ করা যায়। এই ধরনের মাশরুম গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় ভালোভাবে জন্মায়, তাই ভারত এবং বাংলাদেশের বেশিরভাগ ওয়েস্টার (Oyster) মাশরুম পাওয়া যায়।
কিভাবে ছোট পরিসরে মাশরুম চাষ শুরু করবেন ?
মাশরুম চাষ করার জন্য আলাদা কোনো জমির প্রয়োজন নেই। ১০x১০ ফুট একটি ঘরেই মাশরুম চাষ শুরু করা সম্ভব। ঠান্ডা, আর্দ্র ও আলোবিহীন ঘরের প্রয়োজন। এই ধরনের স্থানে মাশরুম চাষ ভালো হয়।
মাশরুম চাষের জন্য আরও যে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সমূহের দরকার সেগুলি হল
মাশরুম স্পন (বীজ), পলিপ্রোপিলিন ব্যাগ, ধানের তুষ বা গমের খোসা ,জল স্প্রে করার বোতল দড়ি, দণ্ড এবং হিউমিডিটি মিটারমাশরুম স্পন (বীজ), পলিপ্রোপিলিন ব্যাগ, ধানের তুষ বা গমের খোসা ,জল স্প্রে করার বোতল দড়ি, দণ্ড এবং হিউমিডিটি মিটার।
সাবস্ট্রেট তৈরি: প্রথমে গোমের খোসা বা ধানের তুষ ৮০-৯০°C তাপমাত্রায় ফুটন্ত জলে দিয়ে ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত করে সেটিকে শুকাতে হবে। এইগুলি শুকানো হয়ে গেলে সেগুলি ব্যাগে ভরে মাশরুম স্পন ছড়িয়ে দিতে হবে।
ইনকিউবেশনপুরো: এরপর ওই ব্যাগগুলো অন্ধকার ঘরে রাখতে হবে। ২০-২৫°C তাপমাত্রা ও ৮০-৯০% আর্দ্রতা বজায় রাখতে হয়। ২০-২৫°C তাপমাত্রা ও ৮০-৯০% আর্দ্রতায় রাখার ফলে দেখবেন ১৫-২০ দিনের মধ্যে সাদা মাইসেলিয়াম বেরিয়েছে।
ফলন সংগ্রহ: ২০ দিন পর ব্যাগগুলো আলো ও বাতাসযুক্ত স্থানে রাখবেন। দেখবেন আস্তে আস্তে মাশরুম ফলতে শুরু করেছে। একটি ব্যাগ থেকে প্রায় দু তিনবার মাশরুম ফেলতে পারে।
কত বিনিয়োগ লাগবে?
| মাশরুম স্পন (২০ কেজি) | 2400 টাকা |
| ধানের তুষ / গমের খোসা জন্য খরচ | 3000 টাকা |
| ব্যাগ ও সরঞ্জামের খরচ | 2000 টাকা |
| অন্যান্য খরচ | 2000 টাকা |
| মোট বিনিয়োগ | প্রায় 9,000 |
আয়ের পরিমাণ
ওয়েস্টার মাশরুমের দাম প্রতি কেজিতে ২০০-২৫০ টাকা। প্রতিদিন যদি ৮-১০ কেজি মাশরুম উৎপাদন হয় তবে দৈনিক আয় ২ হাজার টাকা হতে পারে।। দৈনিক আয় যদি ২০০০ টাকা হয় তাহলে প্রতি মাসে মাশরুম বিক্রি করে আয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৬০ হাজার টাকার কাছাকাছি।
বিক্রির উপায়
মাশরুম বিভিন্নভাবে আপনি বিক্রি করতে পারেন। যেমন ধরুন স্থানীয় বাজারে বা হোটেল রেস্টুরেন্টে সাপ্লাই করেও আপনি আয় করতে পারবেন। আবার অনলাইনের মাধ্যমে ও মাশরুম বিক্রি করা যায়।
সফল হবার জন্য কিছু টিপস
মাশরুম চাষ করার আগে আপনাকে কিছু জিনিস মনে রাখতে হবে তাহলে আপনি এই ব্যবসায় সফল হতে পারবেন।
- প্রথমে মাশরুম চাষ করার জন্য আপনি দুই থেকে তিন দিনের ট্রেনিং নিন।
- মাশরুমের মান ভালো রাখার জন্য আপনাকে ঘরটিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।
- প্রথমদিকে আপনাকে অল্প পরিমাণে চাষ শুরু করলেও ধীরে ধীরে এর উৎপাদন বাড়াতে হবে।
- স্থানীয় ক্রেতাদের সাথে আপনাকে আগে থেকে যোগাযোগ করতে হবে।
- অনলাইনের মাধ্যমে মাশরুম বিক্রি করে আপনি বড় ধরনের একটি ব্র্যান্ডের মালিক হতে পারেন।
বর্তমান সময়ে বাজারে যেভাবে মাশরুমের চাহিদা বেড়ে চলেছে তাতে এই চাষ করে মাসে ত্রিশ হাজার টাকা রোজগার করা কোনো ব্যাপারই নয়। তাই আপনার যদি ১০০ স্কয়ার ফিটের জমি থাকে তাহলে অনায়াসেই আপনি মাশরুম চাষ করতে পারেন।
Read More:—

