Gift Making Business — বেকারত্বের জ্বালা কম-বেশি আমরা সবাই বুঝি? তারপরে বাংলায় শিল্প-কারখানা নেই! চাকরি নেই। উপার্জনের রাস্তা হিসেবে অনেক বাঙালীই এখন ছোটখাট ব্যবসা করছে। যেমন ক্লাউড কিচেন, রুটি বানানো, গিফট, কেক বানানো ইত্যাদি।
চাকরির থেকে বেশি আয় করতে সম্ভব, যদি এই ব্যবসা করতে পারো। এই ব্যবসার সবথেকে বড় সুবিধা হল— অনেক কম খরচে (Investment), বিশাল পরিমান লাভ (Profit) করা যাবে! এমন ব্যবসার খোঁজ আজকের এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে তুলে ধরছি।
তুমি যদি এখনও বেকার হয়ে থাকো? তাহলে এই ব্যবসাটা শুরু করতে পারো। যেখানে নাম-মাত্র ইনভেস্টমেন্ট করে, প্রতিমাসে চাকরির থেকে বেশি পরিমান আয় করতে পারবে। —এই প্রতিবেদনটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত, মনযোগ সহকারে পড়ুন, আমই Step by Step আলোচনা করছি।
ব্যবসা শুরুর আগে যা জানা জরুরী—
লোকেশন
তুমি যেকোন ব্যবসাই শুরু করতে যাও না কেন, সেই ব্যবসা কতটা চলবে? ব্যবসার গ্রোথ (Growth) কেমন হবে? তা নির্ভর করে ব্যবসাটির লোকেশনের উপর। মানে তুমি কোন স্থানে ব্যবসাটা করছ? সে জায়গা জনবহুল কিনা?
সেই জায়গাতে ওই নির্দিষ্ট ব্যবসাটির চাহিদা (Demand) আদৌ আছে কি-না! কারন সব ব্যবসাই ডিমান্ড ও সাপ্লাই এর উপর নির্ভর করে। তাই এমন কোন জায়গায় (Location) বাছাই করা যাবেনা, যেখানে ডিমান্ড কম। এরজন্য, ব্যবসা শুরু করার আগে মার্কেট ভালো করে রিসার্চ করতে হবে
মূলধন বা ব্যবসার পুঁজি
দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল— মূলধন বা ব্যবসার পুঁজি! ব্যবসা শুরু করার সাথে সাথেই, নিশ্চয় তুমি কোটিপতি হয়ে যাবে না। অন্তত ৬ মাস ব্যবসা ফেঁদে বসে থাকতে হবে। নুন্যতম লাভে বা লাভ ছাড়াই মাল বিক্রি করতে হবে। যাতে ব্যবসা বা দোকানের প্রচার হয়।
তার জন্য, কমকরে ছয়মাস থেকে এক বছরের মুলধন বা পুঁজি নিয়ে বসতে হবে। এবং সবথেকে খারাপ পরিস্থিতির জন্যও তৈরী থাকতে হবে। বর্তমান সময়ে, কম খরচে এমন একটি সেরা ব্যবসা হল— গিফট বানানোর ব্যবসা (Gift Kit Creator)। এই ব্যবসার সবথেকে বড় সুবিধা হচ্ছে, নিজের বাড়িতে বসেই এই ব্যবসা শুরু করা যায়।
এই ব্যবসা কেন চলবে?
যখন অনলাইনের এত সুবিধা ছিলনা, তখন মানুষজন নিজের হাতেই গিফট প্যাক করত। কিন্তু বর্তমান দিনে আমরা দেখছি, মানুষের কাছে এত সময় নেই। সময় বাঁচাতে তাঁরা খোঁজে—
- এমন গিফট যা, সুন্দরভাবে প্যাকিং করা।
- অন্যান্যদের থেকে অবশ্যই একটু আলাদা ও ইউনিক উপহার।
- সাথে বাজেটের মধ্যে সেরা গিফট।
গিফট কিট ব্যবসার প্রসেস—
— তুমি বাড়ি বসেই এই ব্যবসার সব কাজ করতে পারো। এরজন্য, কোনো দোকান ঘর ভাড়া নিতে হবেনা।
— তোমার যারা গ্রাহক থাকবে, তাদের বিশেষ দিন (Special Day) সম্পর্কে তোমাকে আগে থেকেই জানাবে। যাতে তুমি গিফট প্রস্তুত করার সময় পাও। যেমন- বিবাহ বার্ষিকী, জন্মদিন, অন্নপ্রাশন, বিয়ে ইত্যাদি।
— কাস্টমারের চাহিদা মতো গিফটের যোগান দেওয়াই তোমার কাজ। গ্রাহক নিজেই কি গিফট দেবে তা ঠিক করে দেয়। অথবা, তুমি নিজেও তোমার গ্রাহককে ইউনিক কিছু উপহার সাজেস্ট করতে পারো। যেমন- বিবাহ বার্ষিকী হলে জোড়া নাম লেখা নেকলেস। জন্মদিন হলে কেক বাদেও আর অন্যান্য কিছু।
— গিফট বাছাই করা হয়ে গেলে, এবার তোমাকে বাজারে গিয়ে সেই গিফট সংক্রান্ত প্রোডাক্ট কিনতে হবে। তারপরে, তা প্যাক করে গ্রাহককে ডেলিভার করতে হবে।
এই সমস্ত কাজ তুমি বাড়ি বসেই WhatsApp বা ফোন কলের মাধ্যমে করতে পারো। কোন অফিস বা দোকান ভাড়া নিতে হবেনা। ধীরে ধীরে ভালো অর্ডার পেতে থাকলে ব্যবসাটিকে অনলাইনে নিয়ে যাবে।
প্রাথমিক ইনভেস্টমেন্ট কত?
— ট্রেন্ডিং গিফট সংক্রান্ত কিছু প্রোডাক্ট বাল্কে কিনে রাখতে হবে। নিউ মার্কেট, চাঁদনী মার্কেট, মেট্রো-গলি থেকে বাল্কে কিনলে অনেক কম খরচে হয়ে যাবে।
— প্রথমেই, বেশি আইটেম রাখার দরকার নেই। ৩/৪টি ক্যাটাগরির আইটেম রাখলেই হবে। কারন মানুষের পছন্দ পরিবর্তন হয়। বর্তমানে, কি ট্রেন্ড চলছে সেই অনুযায়ি প্রোডাক্ট স্টকে রাখতে হবে।
— প্রিন্ট করার একটি মেশিন কিনতে পারো, যেখানে প্রিন্টেড কাস্টমাইজ টি শার্ট, ফোন কভার, কাপ ইত্যাদি প্রিন্ট করা যায়।
প্রথমে অর্ডার কিভাবে পাবে?
প্রথমে, কিছু টাকা তোমার ব্যবসার মার্কেটিং-এর জন্য খরচ করতে হবে। যাতে তোমার দোকান বা ব্যবসা সম্পর্কে মানুষজন জানতে পারে। এক্ষেত্রে, তোমার সেরা প্রোডাক্ট গুলির ভিডিও বা ছবি দিয়ে ফেসবুক, ইন্সটাগ্রামে এড রান করো।
দ্বিতীয়ত— হোয়াটস্যাপ বিজনেস একাউন্টে প্রোডাক্ট লিস্ট করো। নিজের ব্যক্তিগত হোয়াটস্যাপে স্ট্যাটাস দাও। একই কাজগুলি ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রামের জন্যও করতে হবে।
যেহেতু, এই গিফটের নিশ কাস্টমার হচ্ছে বর্তমান দিনের ইয়ং জেনারেশন, বা GENZ – এরা সোশ্যাল মিডিয়াতে এক্টিভ বেশি। ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রামে একটা পেজ খুলে সেখানে তোমার প্রোডাক্টের ছবি ও ভিডিও তুলে পোষ্ট করো।

