প্রতিদিন আয় হবে ২,০০০+ টাকা! সারাবছর চলে এই ব্যবসা — Daily Income Business

Daily Income Business বাঙালি ব্যবসা করতে পারেনা! এই কথাটি আর চলবে না। কেননা আজকালকার দিনে অনেক বাঙালিই ব্যবসায় নামছে। এই অনলাইনের যুগে ব্যবসা করা অনেক সহজ হয়েছে। বর্তমান দিনে স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে জীবনযাপন করতে গেলে বা মধ্যবিত্ত বাঙালির থেকে উপরে উঠতে গেলে যেকোন একটি ব্যবসা করতেই হবে।

কিন্তু ব্যবসা করব বললেই তো আর হলো না! ব্যবসা করতে চাই ইনভেস্টমেন্ট — প্রয়োজন প্রচুর মূলধনের! আর এই মূলধন পাবো কোথায়? তবে চিন্তা নেই এমন কিছু ব্যবসা রয়েছে। যা শুরু করতে অনেক কম টাকার প্রয়োজন। মাত্র 5000/- টাকা দিয়েও ব্যবসা শুরু করে — প্রতিমাসে নূন্যতম 15 থেকে 30 হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।

আমরা বলছি চায়ের ব্যবসার কথা। চায়ের ব্যবসা শুনেই নাম সিটকাবেন না। একটু খোঁজ নিয়ে দেখো তোমার পাড়ার চায়ের দোকান মাসে কত টাকা ইনকাম করে? আর কোনো কাজই ছোটো নয়। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা, বাঙালির কিন্তু চা-ই ভরসা। সারা বছরই চায়ের ব্যবসা দারুন চলে। গ্রাম, শহর, হাইওয়ে হোক বা অলি-গলি বা চায়ের চাহিদা সব জায়গায়।

কেন চায়ের ব্যবসা?

এর প্রথম আর প্রধান কারণ হলো— অত্যন্ত কম পুঁজিতে, মাত্র দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা থাকলেই এই ব্যবসা শুরু করা যায়।

দ্বিতীয়ত— আমাদের রোজকার জীবনে চা সেবন ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে। অনেকেই আছেন যারা সকাল, দুপুর, বিকেল, রাত চারবেলাই চা সেবন করে থাকে। চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজের মতোই চা-ও চাই-ই চাই। তাই এর ডিমান্ড সব সময়ই তুঙ্গে!

তৃতীয়ত— চায়ের অনেক ভেরিয়েন্ট আছে! সাধারণ ‘র’ চা, দুধ চা, লেবু চা, কালো চা (Black Tea), সবুজ চা (Green Tea), হার্বাল চা! প্রতিটি চায়ের দাম আলাদা আলাদা। বেশি ভেরিয়েন্ট দোকানে রাখলে গ্রাহক-ও বেশি আসবেন, রিপিট কাস্টমারও বাড়বে।

চতুর্থত— যারা চায়ের ব্যবসাটিকে সামান্য বলে ভাবেন। এর থেকে কতই বা ইনকাম হবে। এই সামান্য ব্যবসাটিকেও চাইলেই আমরা এক স্টেপ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। কিভাবে?

একটি ক্যাফে খুলে! আমরা যারা GenZ জেনারেশন তারা সারাদিন কাজের শেষে বিকেল বা সন্ধ্যাবেলা চা সহযোগে একটু নিরিবিলিতে আড্ডা দিতে পছন্দ করি। এমত অবস্থায় যদি একটা ক্যাফে খোলা যায় এবং সেখানে সুন্দর আম্বিয়েন্স (Ambience) ও বসার ব্যবস্থা করা যায়, বিভিন্ন স্নাক্স আইটেম রাখা যায়। তাহলে, সেক্ষেত্রেও কয়েকদিনের মধ্যেই ব্যবসা ফুলেফেপে  উঠবে।

চায়ের ব্যবসা শুরু করার জন্য সেরা লোকেশন 

চা মূলত বেশি বিক্রি হয়, ভিড় যে সমস্ত এলাকায় বেশী আছে সেখানে।

কর্পোরেট অফিস এলাকা

যারা কর্পোরেট অফিসে কর্মরত আছেন। তারা কাজের প্রেসার থেকে একটু রিলিফ পেতে, এক হাতে সিগারেট এবং অন্য হাতে চা নিয়ে সেবন করে থাকেন। কলকাতার অফিস পাড়ায় এটি একটি চেনা দৃশ্য 

হাট-বাজার এলাকা   

‘বাজার করতে এসেছি, চলো একটু চা খেয়ে নি’ — আমাদের বাবা কাকাদের এটা একটা নিত্য প্রয়োজনীয় অভ্যাস। বহু প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকায় সপ্তাহে দুই বা তিন দিন হাট বসে। দূর দূরান্ত থেকে মানুষজন এই হাটে এসে কেনাবেচা করেন। প্রচুর জন সমাগম হয়। এমত অবস্থায় চায়ের বিক্রি বাটা অনেক বেশি হয়। 

আর যদি হাটের বিক্রেতাদের আমরা রেগুলার চা  খাওয়াতে পারি। তাহলে বাধা-ধরা কাস্টমার পেয়ে যাচ্ছি।

রেল-বাস স্টেশনে

যখনই ট্রেন বা বাসে যাতায়াত করি, আমি ভাবি — প্রতিদিন এত লোকজন যায় কোথায়? রেল স্টেশন বা বাসস্ট্যান্ড এমন একটা জায়গা যেখানে সবসময় ভিড় থাকে। এখানে শুধুমাত্র চা বলে না, যে কোন ব্যবসা দারুন চলবে। 

চা এমন একটা পানীয় বস্তু, যা ধনী-গরিব, মধ্যবিত্ত সবার সাধ্যের মধ্যে। তাই কারখানা বা ফ্যাক্টরির আশেপাশে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বারে, হাইওয়ের পাশে সব জায়গাতেই চা বিক্রি হয়।

এই ব্যবসা কিভাবে শুরু করবে?

আমাদের কাছে পুঁজি অত্যন্ত কম আছে। ৫ থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে আমাদের চায়ের ব্যবসা শুরু করতে হবে।

প্রথমত চায়ের ঠেলাগাড়ি বা স্টল দিয়ে 

এক্ষেত্রে, খুব বেশি খরচ হয় না! ঠেলাগাড়ি ভাড়া করতে পারো অথবা, নিজের জন্য বানাতেও পারো। খুবই কম খরচে দৈনিক ঠেলাগাড়ি ভাড়া পাওয়া যায় এবং বানাতে গেলেও এককালীন অনেক কম পয়সা খরচ হয়। এই ঠেলাগাড়ি দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে-ঘুরে, চলমান অবস্থায় তুমি চা ও অন্যান্য স্নাক্স আইটেম বিক্রি করতে পারো।

একটি দোকান ভাড়া নিয়ে 

তুমি যদি মনে করো যে— ‘না, আমি ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করব না! এতে শারীরিক পরিশ্রম অনেক বেশি হবে’। সেক্ষেত্রে, একটা দোকান ভাড়া নিতে পারো। বর্তমান বাজার অনুযায়ী ক্ষেত্রবিশেষে আনুমানিক কমকরে ১ হাজার টাকা থেকে ৪/৫ হাজার টাকার মধ্যে দোকান ভাড়া পাওয়া যায়।

যারা ক্যাফে খুলতে চাও 

যাদের কাছে মূলধনের কোন সমস্যা নেই, তারা ক্যাফে খুলতে পারো! এক্ষেত্রে, চায়ের সঙ্গে কিছু বিশেষ আইটেম রাখলে এবং ক্যাফেতে ভালো বসার জায়গা রাখলে, ব্যবসা রমরমিয়ে চলবে।

চা বানাতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র 

  • চায়ের ‘র’ মেটেরিয়াল! যেমন- দুধ, চিনি, চা পাতা, আদা, এলাচ, পুদিনা, তুলসী ইত্যাদি।
  • গ্যাস সিলিন্ডার, ওভেন বা স্টোভ।
  • চায়ের পাত্র স্টিল বা অ্যালুমিনিয়ামের বড় হাড়ি।
  • চা পরিবেশন করার জন্য মাটির ভাড় অথবা পেপার কাপ। 
  • পরিষ্কার জল ও জলের জার।
  • যদি দোকান হয়, তাহলে- চেয়ার বা বেঞ্চ (গ্রাহকদের বসার জন্য)।

 চায়ের ব্যবসা থেকে আয়? 

কত আয় হবে? এবং কত লাভ থাকবে? তা নির্ভর করে দৈনিক আপনি কত কাপ চা বিক্রি করছেন? এবং এক কাপ চায়ের দাম কত?

—উদাহরণস্বরূপ আমরা যদি ধরি আপনি প্রতিদিন গড়ে ২০০ কাপ চা বিক্রি করেন, এবং এক কাপ চায়ের দাম গড়ে পাঁচ টাকা। তাহলে সারাদিনে আপনার বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে যদি আড়াই টাকা করে আপনার লাভ থাকে, এবং বাকি আড়াই টাকা আপনার ইনভেসমেন্ট। তাহলে আপনার দৈনিক লাভ হচ্ছে ৫০০ টাকা, যা মাসে দাঁড়াচ্ছে ১৫ হাজার টাকা। 

—তাহলে একবার ভাবুন আপনি দৈনিক ৫০০ টাকা করে ইনভেস্টমেন্ট করছেন। সেই ৫০০ টাকার উপরে, আপনার আবার ৫০০ টাকা লাভ হচ্ছে। এত কম বিনিয়োগে, শুধুমাত্র চায়ের ব্যবসা থেকেই, বিনিয়োগের সমপরিমান লাভ করা সম্ভব।

Read More—

Verified Job

Verified Job — পশ্চিমবঙ্গসহ সমগ্র দেশের চাকরি ও ব্যবসা সংক্রান্ত নির্ভরযোগ্য এবং ভেরিফাইড তথ্য প্রদানকারী একটি শীর্ষস্থানীয় জব নিউজ পোর্টাল। এখানে শুধুমাত্র সঠিক ও বিশ্বাসযোগ্য খবর প্রকাশিত হয়, কোনো ভ্রান্ত বা অপ্রাসঙ্গিক তথ্য নয়। গত ৬ বছর ধরে আমরা ডিজিটাল মিডিয়ার মাধ্যমে পাঠকদের নির্ভরযোগ্য সংবাদ দিয়ে আসছি।