₹1,20,000 টাকা পাবে বাংলা আবাস যোজনা স্কীমে! কিভাবে আবেদন করবে? দেখে নিন।

Bangla Awas Yojana Scheme 2025: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের জনসাধারণের জন্য একাধিক প্রকল্পে সূচনা করেছেন, যেগুলোর মাধ্যমে রাজ্যের জনগণ আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের স্কুল, কলেজ পড়ুয়া থেকে শুরু করে মহিলা এবং বয়স্ক মানুষ, যুবক এবং অন্যান্য কর্মসংস্থানের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের জন্য বিভিন্ন প্রকার প্রকল্প এনেছেন।

তবে যে প্রকল্প রাজ্যের মানুষদের অনেকটাই আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে এবং মাথার উপর একটি শক্ত ছাড় গড়ে দেওয়ার জন্য সচেষ্ট ভূমিকা পালন করছে সেই প্রকল্প হলো বাংলার বাড়ি প্রকল্প। বাংলার বাড়ি প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের নিম্ন ও দরিদ্র পরিবারগুলো যাদের মাথার ওপর একটি শক্ত ছাদ নেই, তাদের জন্য একটি পাঁকা বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার জন্য অনুদান প্রদান করা হচ্ছে।

যদিও আগে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের মাধ্যমে কেন্দ্র এবং রাজ্যের একটা মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের অনুদান বরাদ্দ করা হতো রাজ্যের মানুষের জন্য কিন্তু কিছু কারণবশত প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের অনুদান দেওয়া স্থগিদ রয়েছে। এজন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পূর্ণ নিজের উদ্যোগে রাজ্যের রাজস্ব ভান্ডার থেকে বাংলার নিম্ন দরিদ্র পরিবারগুলোর মাথায় পর ছাদ গড়ে দেওয়ার জন্য ব্রতি হয়েছেন।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের হাজার হাজার পরিবার উপকৃত হচ্ছেন এবং একটি ভালো পাঁকা বাড়িতে থাকার পরিবেশ পাচ্ছেন। আপনি যদি একজন নিম্ন-দরিদ্র পরিবারের অন্তর্গত হয়ে থাকেন অথচ আপনি এখনো পর্যন্ত জানেন না, কিভাবে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে আবেদন করবেন? এর জন্য কি ন্যূনতম যোগ্যতা রয়েছে? কত টাকা অনুদান পাবেন? এই সমস্ত বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

বাংলার বাড়ি প্রকল্পের মূল লক্ষ্য

বাংলার বাড়ি প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের নিম্ন দরিদ্র পরিবারগুলোকে একটি পাঁকা বাড়ি তৈরি করে দেওয়া, যার মাধ্যমে তারা সুরক্ষিত ভাবে বসবাস করতে পারে সাধারণ মানুষজন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে একটি বাড়ি তৈরির জন্য ১ লাখ ২০/৩০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।

মোট তিনটি কিস্তিতে এই টাকা প্রদান করা হয়। প্রত্যেক কিস্তিতে টাকা দেওয়ার পরে নির্দিষ্ট পরিমাণ কাজ করার পরে আবার দ্বিতীয় কিস্তি টাকা প্রদান করা হয়। উপভোক্তাদের ব্যাংক একাউন্টে এই টাকা নির্দিষ্ট সময়ে দিয়ে দেওয়া হয়।

অনুদানের পরিমাণ

মোট ১ লাখ ২০/৩০ হাজার টাকা দেওয়া হয়, তিনটি কিস্তিতে এই টাকা উপভোক্তদের নিজস্ব ব্যাংক একাউন্টে প্রদান করা হয়।

  • উপভোক্তাদের জমি ভেরিফিকেশন এর পরে প্রথম কিস্তিতে ৫০ হাজার টাকা সরাসরি ব্যাংক একাউন্টে দেওয়া হয়।
  • এরপর বাড়ি নির্মাণের অগ্রগতি যাচাইয়ের পর দ্বিতীয় কিস্তিতে ৪০ হাজার টাকা ব্যাংক একাউন্টে পাঠানো হয়।
  • এর পরবর্তী ধাপে বাকি বাড়ি সমাপ্ত করার জন্য ১০-২০ হাজার টাকা পাঠানো হয়।

বাংলার বাড়ি প্রকল্পে আবেদনের যোগ্যতা

এই প্রকল্পে আবেদনের জন্য যে সমস্ত যোগ্যতা থাকতে হবে একজন আবেদনকারীর সেগুলি হল-

  1. আবেদনকারীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
  2. কোনরকম পাকা বাড়ি থাকা যাবে না।
  3. রেশন কার্ড BPL ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত হতে হবে।
  4. বাড়ির কোন ব্যক্তি সরকারি চাকরির সঙ্গে যুক্ত থাকলে আবেদন করা যাবেনা।
  5. জমির পর্চা বা বাড়ির দলিল থাকতে হবে।

উপরের এই যোগ্যতার মানদন্ডগুলো পূরণ হলেই আপনি এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথি

আবেদন করার জন্য যে সমস্ত নথি প্রয়োজন হবে, সেগুলো হলো-

  • আবেদনকারীর পরিচয় পত্র হিসেবে আধার কার্ড/ ভোটার কার্ড।
  • BPL রেশন কার্ড।
  • বার্ষিক আয়ের প্রমাণপত্র।
  • স্থায়ী বাসিন্দার প্রমাণপত্র।
  • জমির দলিল/পর্চা (যেটি বাড়ি নির্মাণে ব্যবহার করা হবে)।
  • সম্প্রতি তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি।

আবেদন প্রক্রিয়া

মূলত অফলাইন মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

  • আপনাকে সর্বপ্রথম স্থানীয় পঞ্চায়েত বা বিডিও পঞ্চায়েত অফিস থেকে আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে।
  • এরপর আবেদন পত্রটির নির্ভুলভাবে পূরণ করতে হবে।
  • উল্লেখিত সমস্ত ডকুমেন্ট সংযুক্ত করে ওই একই অফিসে জমা দিতে হবে।
  • আবেদন জমা করার পর অফিস থেকে আপনাকে একটি আবেদন নম্বর রিসিভ কপি দেবে। ভবিষ্যতের রেফারেন্সের জন্য সেটি সংরক্ষণ করে রাখবেন।
  • এরপর ভেরিফিকেশন হবে পঞ্চায়েত বা ব্লক অফিস থেকে আপনি ফোন বা মেসেজের মাধ্যমে জানতে পারবেন এই প্রকল্পে তালিকা ভুক্ত হয়েছে কিনা।

আপনার নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে কিনা কি করে বুঝবেন?

আবেদন করার পর আপনার নাম বাংলার বাড়ি প্রকল্পের তালিকাভুক্ত হয়েছে কিনা তা জানার জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম

স্থানীয় পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে ‘Beneficiary List’ বা ‘PMAY List’ কপি সম্পর্কে জানতে হবে।

কিছু জেলার তরফ থেকে ব্লক ওয়েবসাইট তালিকা প্রকাশিত হয়। এর জন্য আপনি অনলাইন মাধ্যমে আপনার ব্লক বা জেলার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে তালিকা চেক করতে পারেন।

তালিকার নাম থাকার পরে কি করবেন?

আপনার নাম যদি তালিকায় দেখতে পান তার পরেই আপনার পরবর্তী ধাপ অনুসরণ করতে হবে। এরপর আপনাকে স্থানীয় পঞ্চায়েত ব্লক অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করতে হবে। ব্যাংক একাউন্ট এর বিবরণ সঠিক দেওয়া আছে কিনা তার একবার যাচাই করতে হবে।

যদি সব কিছু ঠিক থাকার পরও আপনার ব্যাংক একাউন্টে টাকা না আসে তাহলে আবার আবেদনের রিসিভ কপি এবং সমস্ত ডকুমেন্টসহ আরেকবার অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করতে হবে। যদি আপনার আবেদন তথ্য থেকে কোনরকম ভুল থাকে তাহলে সেগুলো সংশোধন করে আবার নতুন করে আবেদনপত্র ডকুমেন্ট জমা করতে হবে পঞ্চায়েত অফিসে।

নিঃসন্দেহে বলা যায় মুখ্যমন্ত্রী পরিচালিত বাংলার বাড়ি প্রকল্পে একটি অভিনব প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে হাজার হাজার নিম্ন দরিদ্র পরিবারগুলো একটি ভালো পাঁকা বাড়িতে থাকার সুযোগ পাচ্ছেন। এরফলে তাদের সামাজিক মান উন্নয়ন হচ্ছে এবং এর সাথে মাথার উপর শক্ত ছাদ হওয়ার ফলে তাদের জীবন সুরক্ষিত থাকছে।

রাজ্যের প্রত্যেকটি নিম্ন দরিদ্র পরিবার যাতে পাঁকা বাড়িতে বসবাস করার সুবিধা পায় তার জন্যই প্রকৃত ও যোগ্য ও উপভোক্তাদের বাংলার বাড়ি প্রকল্পের মাধ্যমে অনুদান দেওয়া হয়। যার মাধ্যমে প্রকৃত উপভোক্তা এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে সুস্থ জীবন যাপন করতে পারে। আপনিও যদি এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করতে ইচ্ছুক থাকেন তাহলে উপরের যোগ্যতা মানদন্ডগুলো পূরণ হলেই এই প্রকল্পে আবেদন করতে পারেন উপরে বর্ণিত পদ্ধতি অ্যাপ্লাই করে।

Read More:—

Leave a Comment

Verified Job

Verified Job — পশ্চিমবঙ্গসহ সমগ্র দেশের চাকরি ও ব্যবসা সংক্রান্ত নির্ভরযোগ্য এবং ভেরিফাইড তথ্য প্রদানকারী একটি শীর্ষস্থানীয় জব নিউজ পোর্টাল। এখানে শুধুমাত্র সঠিক ও বিশ্বাসযোগ্য খবর প্রকাশিত হয়, কোনো ভ্রান্ত বা অপ্রাসঙ্গিক তথ্য নয়। গত ৬ বছর ধরে আমরা ডিজিটাল মিডিয়ার মাধ্যমে পাঠকদের নির্ভরযোগ্য সংবাদ দিয়ে আসছি।