২০০২-এর ভোটার তালিকায় আপনার নাম আছে তো? কিভাবে জানবেন? SIR-এ অংশ না নিলে কী হবে?

বর্তমানে বাংলা জুড়ে চলছে SIR প্রক্রিয়ার তোড়জোড়। বিহারের SIR সমীক্ষা শেষ হওয়ার পরেই বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষণা করা হয়েছে। এইবার বাংলায় ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়া এবং SIR সমীক্ষার দ্রুত করার জন্যই জাতীয় নির্বাচন কমিশন তৎপর হয়েছেন। কিছুদিন আগেই দু দিনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল দিল্লিতে।

জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বাংলার প্রত্যেক জেলার মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকদের, যাতে খুব দ্রুত ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়া শেষ করে এসআইআর সমীক্ষা শুরু করা হয়। এজন্যই এখন বাংলা জুড়ে খুবই দ্রুততার সাথে SIR প্রক্রিয়া শুরু করার কর্মকাণ্ড চলছে।

জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তৎপরতা

উৎসব চলাকালীন দিনগুলিতেই বাংলায় জাতীয় নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা এসেছিলেন 2002 সালের ভোটার তালিকা সাথে ২০২৫ তার সালের ভোটার তালিকা মিলিয়ে দেখার জন্য। অর্থাৎ এই ম্যাপিং এন্ড ম্যাচিং প্রক্রিয়া মাধ্যমে ২০০২ সালের ভোটার তালিকার সাথে ২০২৫ সালের ভোটার তালিকা মিলিয়ে দেখা হবে। এরপরে SIR সমীক্ষা শুরু হবে বাংলা জুড়ে।

সাধারণ মানুষের উদ্বিগ্নতার বহিঃপ্রকাশ

ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ব্যক্তিদের মধ্যে SIR নিয়ে উদ্বিগ্নতা শুরু হয়েছে। অনেকের মনে বিভিন্ন রকম প্রশ্ন উঠছে SIR -কে কেন্দ্র করে। অনেকেই ভাবছেন ২০০২ সালের ভোটার তালিকা কোথা থেকে পাবেন? কিভাবে দেখবেন ২০২৫ সালের ভোটার তালিকের নাম বাদ পড়েছে কিনা? কাদের নাম বাদ পড়তে চলেছে ভোটার তালিকায়? এই সমস্ত বিষয়ে বিভিন্ন উদ্বিগ্নতার প্রকাশ করেছেন অনেক ব্যক্তি।

SIR-এর ম্যাপিং প্রক্রিয়া

SIR ম্যাপিং প্রক্রিয়া হল, ২০০২ সালের ভোটার তালিকা সাথে ২০২৫ সালের ভোটার তালিকা মিলিয়ে দেখা প্রক্রিয়া। যেমন ২০০২ সালে বাংলায় ভোটাররের সংখ্যা ছিল ৪.৫৮ কোটি। এই কয়েক বছরে তিন কোটি বেড়ে এখন রাজ্যে ভোটার সংখ্যা ৭.৬৫ কোটি দাঁড়িয়েছে। এই বাড়তি সংখ্যা এবং আগের সংখ্যার উপর ভিত্তি করেই চলছে ম্যাপিংয়ের কাজ।

২০০২ ও ২০২৫ সালের ভোটার তালিকা মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। যে সমস্ত ভোটারদের নাম দুটি তালিকাতেই অন্তর্ভুক্ত থাকবে একমাত্র তাদেরই ম্যাপিং এর আওতায় আনা হবে। এই ভোটারদের চিহ্নিতকরণ করা হবে। এই ভোটারদের নতুন করে নাগরিকত্ব প্রমাণ করার প্রয়োজন পড়বে না কারণ তাদের পরিবারের সদস্যরা ভারতীয় নাগরিক সেটা দুটি ভোটার তালিকায় নাম থাকার দরুন প্রমাণ হয়ে যাবে।

কিভাবে দেখবেন ২০০২ সালের ভোটার তালিকা

ইতিমধ্যেই জাতীয় নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে 2002 সালের ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সেই সময়কার বিধানসভা অঞ্চল অনুযায়ী ধরে ধরে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ভোট গ্রহণ কেন্দ্রের নাম মিলিয়ে ভোটাররা অ্যান্ড্রয়েড ফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহার করে বাড়িতে বসেই ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নিজেদের নাম রয়েছে কিনা সেটা দেখে নিতে পারবেন।

২০২৫ সালের ভোটার তালিকায় কাদের নাম বাদ পড়তে চলেছে?

যে সমস্ত ব্যক্তিদের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় পরিবারের কোনো সদস্যের নামই নেই বা দেশের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে যে ব্যক্তি ব্যর্থ হয়েছেন তাদের নামই একমাত্র ২০২৫ সালের ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে। এমনটাই জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া মৃত ও অবৈধ ভোটারদের নাম বাদ থাকবে ২০২৫ এর ভোটার তালিকা থেকে। যে সমস্ত ব্যক্তিদের নাম দুবার করে রয়েছে অর্থাৎ দু জায়গায় দুটি এপিক নম্বর থাকলে একটি জায়গা থেকে সেই ব্যক্তির নাম কাটা যাবে।

SIR প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ না করলে কি হবে?

জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে নির্দেশ দিয়েই দেওয়া হয়েছে প্রত্যেক রাজ্যকেই এসআইআর সমীক্ষার অংশগ্রহণ করতে হবে। যেই রাজ্যে আগে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে সেই রাজ্যে আগে এসআইআর সমীক্ষা হবে। যদি কোন ভোটার SIR সমীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেন তাহলে তিনি ২০২৬ এ ভোট দিতে পারবেন না কারণ তার ২০২৫ এর ভোটার তালিকায় নাম থাকবে না।

SIR তালিকা কোথায় পাবেন?

SIR-এর সমীক্ষার কাজ সমাপ্ত হওয়ার এক মাস পর একটা খসড়া তালিকা প্রকাশিত করা হবে। যদি এই খসড়া তালিকাতে কোন ভুল বা কোন ব্যক্তি অভিযোগ করেন তাহলে নির্বাচন কমিশন সেটি আবার পুনরায় খতিয়ে দেখবেন। যদি অভিযোগ বা ত্রুটির যথোপযুক্ত প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে সেটা আবার পুনরায় ঠিক করে দেওয়া হবে নির্বাচন কমিশনের তরফে। যেইভাবে বিহারে এসআইআর সমীক্ষা করা হয়েছে একই প্রক্রিয়ায় বাংলায় এবং অন্যান্য রাজ্যে SIR সমীক্ষা করা হবে।

SIR সমীক্ষা এতটা গুরুত্বপূর্ণ কেন?

প্রত্যেক বছরই ভোটার তালিকা সংশোধন করা হয় নির্বাচন কমিশনের তরফে। প্রত্যেক বছরই নতুন কিছু ভোটারের নাম যুক্ত হয় এবং মৃত্যুজনিত কারণে কিছু ভোটারের নাম বাদ যায়। এই নাম তোলা এবং বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া সঠিকভাবে এবং নিপুণভাবে করার জন্যই নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া জরুরী, যাতে ত্রুটিমুক্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা যায়। এইজন্যই SIR সমীক্ষা এতটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন জাতীয় নির্বাচন কমিশন।

Read More:— 

Leave a Comment

Verified Job

Verified Job — পশ্চিমবঙ্গসহ সমগ্র দেশের চাকরি ও ব্যবসা সংক্রান্ত নির্ভরযোগ্য এবং ভেরিফাইড তথ্য প্রদানকারী একটি শীর্ষস্থানীয় জব নিউজ পোর্টাল। এখানে শুধুমাত্র সঠিক ও বিশ্বাসযোগ্য খবর প্রকাশিত হয়, কোনো ভ্রান্ত বা অপ্রাসঙ্গিক তথ্য নয়। গত ৬ বছর ধরে আমরা ডিজিটাল মিডিয়ার মাধ্যমে পাঠকদের নির্ভরযোগ্য সংবাদ দিয়ে আসছি।