RBI চালু করল ব্যাঙ্কিং এর নতুন নিয়ম! ব্যাঙ্কে একাউন্ট থাকলেই পাবেন প্রচুর সুবিধা।

New Bank Rules: এতদিন পর্যন্ত ব্যাংকে যদি চেক ক্লিয়ার করতে দেওয়া হতো সে ক্ষেত্রে সময় হতে লেগে যেত বেশ কয়েকদিন। চেক ক্লিয়ারেন্স হতে এত সময় লাগানোর জন্য গ্রাহকের কাছে একটি সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতো। তবে এই সমস্যার সম্প্রতি মুক্তি ঘটিয়েছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক। সম্প্রতি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI) গ্রাহকদের চেক ক্লিয়ারেন্সের নিয়মে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে।

এবার থেকে চেক ক্লিয়ারেন্স এর জন্য গ্রাহকদের আর দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হবে না। একই দিনেই তাদের একাউন্টে ব্যালেন্স চলে আসবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার এই নতুন নিয়মটি যে গ্রাহকদের হয়রানি থেকে মুক্তি দেবে শুধু তাই নয়, গোটা ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ এবং গতিশীল করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

RBI চেক ক্লিয়ারেন্স নতুন নিয়ম

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া চেক ক্লিয়ারেন্স এর ব্যাপারে যে নতুন নিয়মটি এনেছে সেটি কার্যকর হয়েছে ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৫ থেকে। এই নতুন নিয়মে বলা হয়েছে আগের মত গ্রাহকদের চেক ক্লিয়ার হতে বেশি সময় লাগবে না।

RBI-এর এই নতুন নিয়মের নাম দেওয়া হয়েছে ‘কন্টিনিউয়াস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড সেটেলমেন্ট অন রিয়েলাইজেশন’! এই নতুন নিয়মের মূল উদ্দেশ্য হল ব্যাংকের চেক ক্লিয়ারিং প্রক্রিয়াকে দ্রুত এবং আরও বেশি গ্রাহক-বান্ধব করে তোলা। এবার এই নিয়মের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি নিয়ে আলোচনা করব।

১) রিয়েল-টাইম ক্লিয়ারিং: আগে যদি গ্রাহকরা চেক ক্লিয়ারেন্স এর জন্য ব্যাংকে চেক জমা দিতেন সে ক্ষেত্রে গ্রহণকারী ব্যাংকটি দিনশেষে ব্যাচ করে চেকগুলিকে ক্লিয়ারিং হাউসে পাঠাতো। এবার এই নিয়মের বদল এসেছে এখন থেকে ব্যাংকে সিঙ্গেল প্রেজেন্টেশন স্টেশন থাকবে। গ্রাহকরা সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টের মধ্যে ব্যাংকে যদি চেক জমা দেন তাহলে তা সঙ্গে সঙ্গে স্ক্যান করে ক্লিয়ারিং হাউসে পাঠিয়ে দেওয়া হবে গ্রহণকারী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

২) তাৎক্ষণিক ভেরিফিকেশন: চেকটি যে ব্যাংকের সেই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ চেকের সত্যতা খুব তাড়াতাড়ি মধ্যেই যাচাই করে নেবে। চেক জমা দেওয়ার পর সন্ধ্যের সাতটার মধ্যে যদি গ্রাহককে গ্রহণকারী ব্যাংকের তরফ থেকে কোনো ফোন না করা হয়। তাহলে জানতে হবে যে চেকটি সত্য এবং টাকাটি গ্রাহক তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পেয়ে যাবে।

৩) তিন ঘণ্টার মধ্যে ক্লিয়ারেন্স: নতুন বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালের ৩রা জানুয়ারি থেকে এই সিস্টেম আরও দ্রুত হয়ে যাবে। আগামী ৩রা জানুয়ারি থেকে গ্রাহক ব্যাংকে চেক জমা দেওয়ার তিন ঘন্টার মধ্যে ড্রয়ী ব্যাঙ্ককে (যে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা কাটা হবে) কনফার্মেশন দিতে হবে। অর্থাৎ যদি গ্রাহকটি সকাল দশটাতেই ব্যাংকে চেক জমা দেন তবে বিকেলের মধ্যেই তার ব্যাংক একাউন্টে টাকা যুক্ত হয়ে যাবে।

আগের নিয়মের সঙ্গে এখনকার নিয়মের পার্থক্য

আগে গ্রাহকরা যখন ব্যাংকে চেক ক্লিয়ারেন্সের জন্য জমা করতেন তখন ‘T+1’ দিন সময় লাগত। অর্থাৎ দেখা যেত যেদিন গ্রাহকরা চেক জমা করছেন পরের দিন তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকাটি আসছে। তবে আবার যদি ছুটির দিন পড়তো তাহলে সেই সময়টা আরো দীর্ঘ হত।

এর কারণ ছিল চেক ক্লিয়ারেন্স প্রক্রিয়াটি ছিল পেপারভিত্তিক। চেকটিকে ফিজিক্যালি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে অনেক সময় লাগতো। MICR এবং CTS-এর মতো প্রযুক্তি চালু হওয়ার পরও রিয়েল টাইম ক্লিয়ারেন্স হওয়া সম্ভব হয়নি।

নতুন নিয়মে গ্রাহকদের কি সুবিধা হবে?

ঝুঁকি হ্রাস: রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া চেক ক্লিয়ারেন্সের যে নতুন নিয়ম চালু করেছে সেখানে গ্রাহকরা চেক বাউন্স হওয়ার ভয় থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকবে। চেক বাউন্স না হলে গ্রাহকদের অর্থের জন্য অনিশ্চয়তায় ভুগতেও হবে না।

দ্রুত টাকার লেনদেনের ব্যবস্থা- চেক জমা দেওয়ার পরে টাকা ব্যাংক এঅ্যাকাউন্টে যুক্ত হবার জন্য গ্রাহকদের আর দুদিন বা তিন দিন অপেক্ষা করতে হবে না। এখন থেকে চেক ক্লিয়ারেন্স এর জন্য ব্যাংকে চেক জমা দিলেই কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গ্রাহকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা যুক্ত হয়ে যাবে।

ডিজিটাল ইন্ডিয়ার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে: এই নতুন নিয়মের ফলে ভারতের ব্যাংকিং ব্যবস্থা কে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেবে, এর পাশাপাশি ডিজিটাল লেনদেনকেও আরো উৎসাহ দান করবে।

পরিশেষে বলি রিজার্ভ ব্যাংকের এই নতুন নিয়মের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে যেমন যদি কোনো ব্যক্তি বিকেল চারটের পরে ব্যাংকে চেক ক্লিয়ারেন্স এর জন্য চেক জমা দেন তবে তার ক্লিয়ার পরের দিন হবে। আবার ছুটির দিনে গ্রাহকরা এই সুবিধা পাবেন না। তবে যাই হোক সাধারণ মানুষ থেকে ব্যবসায়ীদের জন্য রিজার্ভ ব্যাংকের এই নতুন নিয়মটি স্বস্তি দান করেছে।

Read More:—

Leave a Comment

Verified Job

Verified Job — পশ্চিমবঙ্গসহ সমগ্র দেশের চাকরি ও ব্যবসা সংক্রান্ত নির্ভরযোগ্য এবং ভেরিফাইড তথ্য প্রদানকারী একটি শীর্ষস্থানীয় জব নিউজ পোর্টাল। এখানে শুধুমাত্র সঠিক ও বিশ্বাসযোগ্য খবর প্রকাশিত হয়, কোনো ভ্রান্ত বা অপ্রাসঙ্গিক তথ্য নয়। গত ৬ বছর ধরে আমরা ডিজিটাল মিডিয়ার মাধ্যমে পাঠকদের নির্ভরযোগ্য সংবাদ দিয়ে আসছি।