Govt Loan:— স্বনির্ভর হওয়ার জন্য সেরা সুযোগ এনে দিচ্ছে সরকার। আর মুখ বুজে চুপ করে বসে থাকা নয়। বেকারত্বের জ্বালা সহ্য করতে না পেরে দিনের পর দিন বিভিন্ন জায়গা থেকে বঞ্চনা, গঞ্জনা, অপমান সইতে হচ্ছে। সেদিকে আর কর্ণপাত না করে এবার এগিয়ে চলুন, নিজের জীবনকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে।
কোনো সংস্থা বা কারোর দোরগোড়ায় গিয়ে আবেদন করতে হবে না, বায়োডাটা হাতে নিয়ে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না, শুধু একটিমাত্র কাজের জন্য। পশ্চিমবঙ্গের বেকার যুবক-যুবতীদের ব্যবসা করে স্বনির্ভর হওয়ার জন্য পাশে এসে দাঁড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার!
এমন একটি প্রকল্প মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বাস্তবায়িত করেছে, যে প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের যেকোনো বাসিন্দা একেবারে কোনো ধরনের গ্যারান্টার ছাড়া নিশ্চিন্তে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নিয়ে নিজের ব্যবসা শুরু করে দিতে পারবেন। আর মাসের শেষে উপার্জন করতে পারবেন মোটা টাকা।
এই অব্দি শুনে ভাবছেন কি ধরনের প্রকল্প? কিভাবে তা আপনি পেতে পারেন? সেই সম্বন্ধে জানার আগ্রহ বেড়ে চলেছে। আপনার আগ্রহ নিরসনে এই প্রতিবেদনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের এই স্কীম নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হচ্ছে। যেখান থেকে আপনি আপনার নিজের জীবনে নতুন করে বাঁচার পথ খুঁজে পেতে পারেন।
প্রকল্পে সম্পর্কে —
প্রথমেই জেনে নেই, পশ্চিমবঙ্গ সরকার বেকার যুবক-যুবতীদের স্বনির্ভর হওয়ার লক্ষ্যে যে প্রকল্পটি এনেছে তার নাম— ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড স্কিম (Bhabishyat Credit Card Scheme) — রীতিমত চমকে দেওয়ার মতো একটি ধামাকাদার প্রকল্প এটি।
ভবিষ্যত ক্রেডিট কার্ডে সরকারের ভূমিকা
এই প্রকল্পটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের স্বনির্ভর হওয়ার জন্যই বাস্তবায়িত করেছেন। ফলে এক্ষেত্রে প্রকল্পটি সম্পূর্ণ সরকারের পরিচালনাধীন এবং নিয়ন্ত্রণাধীন। রাজ্য সরকার ব্যবসা করার জন্য ১০% সাবসিডি দেবে।
সেক্ষেত্রে আপনি যদি ২ লক্ষ টাকায় একটি ব্যবসা শুরু করতে চান, সেখানে সরকার ২০ হাজার টাকা অনুদান হিসেবে দেবে আপনাকে। বাকি অংশের টাকা অর্থাৎ ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ঋণ হিসেবে দেওয়া হবে। যা আপনি সহজ কিস্তিতে EMI- এর মাধ্যমে শোধ করতে পারবেন। ফলে আপনার চাপ অনেকটাই কমে যাবে।
কারা এই ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা পাওয়ার যোগ্য?
প্রথমেই জেনে রাখা দরকার—
- আপনাকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
- বয়স সীমা ১৮ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে থাকতে হবে।
- কোনো সরকারি কর্মচারীরা এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
- পূর্ববর্তী কোনো লোন শোধ করতে গিয়ে সমস্যার কারণে ব্যর্থ হয়ে থাকলে এই প্রকল্পের ক্ষেত্রেও কিন্তু অযোগ্য বলেই বিবেচিত হবেন।
সুযোগ সুবিধা
চাকরির জন্য কোনো জায়গায় না ঘুরে যখন নিজে ব্যবসা শুরু করতে আগ্রহী হবেন, তখন প্রথমেই যে বিষয়ের দরকার তা হলো মূলধন বা পুঁজি। সে ক্ষেত্রে আপনাকে সরকার ১০ শতাংশ অনুদান হিসেবে দেবে। বাকি অংশ আপনি লোন হিসেবে পাবেন যা আপনাকে খুব সহজ পদ্ধতিতে শোধ করতে হবে। সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন পেতে পারেন।
এই স্কিমে আবেদন করার জন্য আপনাকে কোথাও ছুটোছুটি করতে হবে না। ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে ঘরে বসেই আবেদন করতে পারবেন।
মহিলারা যারা ব্যবসা করে স্বনির্ভর হতে ইচ্ছুক বা কোনো ধরনের ছোট ক্ষুদ্র ব্যবসা করার জন্য আগ্রহী, তাদের জন্য সরকারের তরফে বিশেষ ছাড় থাকছে এই স্কিমের মাধ্যমে।
শুধুমাত্র যে ব্যবসার ক্ষেত্রেই ঋণ পাবেন তা নয়, এক্ষেত্রে আপনি যদি কোনো স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামে যুক্ত হতে চান, সেটাও এই প্রকল্পের মাধ্যমে সুবিধা নিতে পারবেন।
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
আবেদনকারীর আধার কার্ড,
- ভোটার কার্ড,
- রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট,
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি,
- যেহেতু ব্যাংকিং লেনদেন সেক্ষেত্রে প্যান কার্ড প্রযোজ্য,
- ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ডিটেলস,
- Project Report— যে ব্যবসা করার জন্য এই ঋণের আবেদন করছেন, তার একটি ছোট্ট পরিকল্পনা জানাতে হবে।
টাকা কবে পাওয়া যাবে?
ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ডের (Bhabishyat Credit Card) সুবিধা নেওয়ার জন্য যখনই কোনো আবেদনকারী আবেদন ফর্ম জমা দেবেন, তখন সরকারের তরফে তার স্ক্রুটিনি করে যাচাই করা হবে। যদি সেই আবেদন মঞ্জুর হয়ে থাকে তাহলে অনুমোদনের ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি এই ঋণের টাকা জমা পড়ে যাবে।
কিভাবে আবেদন করবেন?
তাহলে এবার আসুন, এক নজরে দেখে নেওয়া যাক—
— ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট bccs.wb.gov.in এখানে ভিজিট করতে হবে।
— New Registration অপশন বেছে নিয়ে নিজের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে।
— যে সমস্ত নির্ধারিত ডকুমেন্টস রয়েছে, সেই ডকুমেন্টস এর স্ক্যান কপি ফরম্যাটে আপলোড করতে হবে।
— আপনি যে ব্যবসা করতে ইচ্ছুক অর্থাৎ যে ব্যবসা করার জন্য আপনি আবেদন করছেন, তার একটি ছোট্ট পরিকল্পনা (Project Report) লিখিত আকারে বর্ণনা করে দিতে হবে। কত টাকার প্রয়োজন রয়েছে? ব্যবসা কিভাবে শুরু করতে চান? সেই ব্যবসার আউটপুট অর্থাৎ লাভের পরিমাণ আনুমানিক কত হতে পারে? সেই সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে।
— সম্পূর্ণ আবেদন চেক করে দেখে নিয়ে সাবমিট করে রেফারেন্স নম্বরটিকে নিজের কাছে রেখে দিতে হবে।
ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কোন কোন ব্যবসা শুরু করা যাবে?
- যেকোনো ধরনের ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট।
- ব্যবসার মধ্যে দোকান বা কোনো স্টল অর্থাৎ ট্রেডিং জাতীয় ব্যবসা।
- কাস্টমার সার্ভিস সংক্রান্ত ব্যবসা, ধরুন, আইটি সার্ভিস, ডিজিটাল মার্কেটিং, কোনো কোচিং সেন্টার।
- কৃষিকাজ সম্পর্কিত যেকোনো ধরনের ব্যবসা।
- দক্ষতা বৃদ্ধি অর্থাৎ স্কিল ডেভেলপমেন্ট।
সর্বোপরি এক কথায় বলা যেতে পারে, রাজ্য সরকারের তরফে ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড স্কিমে কোনো ধরনের নথিপত্র বা গ্যারান্টার ছাড়াই এই ৫ লক্ষ টাকার লোন (Without Guaranter Loan Scheme from WB Govt.) রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের জীবনে এক অন্য দিশা এনে দেবে।
তাই দেরি না করে এই স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হয়ে স্বনির্ভর হওয়ার চেষ্টা করুন। এই প্রকল্পটিকে রাজ্যের নতুন চমক হিসেবেও ধরা যেতে পারে। যেহেতু দেশ জুড়ে কর্মসংস্থানের অভাব, সেক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দারা সরকারের এই স্কিমের সুবিধা এক্ষুনি নিতে পারেন।
Read More:—

