Yuvashree Prakalpo — রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের জন্য দারুন বড় সুখবর! চাকরি বা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত, বেকার ছেলে-মেয়েদের প্রতিমাসে ১৫০০/- টাকা ভাতা দেওয়া হবে। কোন স্কুল থেকে নুন্যতম অষ্টম শ্রেনী পাশ করলেই এখানে আবেদন করতে পারবে।
রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দারাই শুধুমাত্র এই স্কীমে আবেদনযোগ্য! কিভাবে আবেদন করবে? বয়সসীমা কি লাগবে? ডকুমেন্ট কি কি চাই? কিভাবে এই ভাতা পাবে? এই সমস্ত কিছু বিস্তারিত আলোচনা করছি আজকের এই প্রতিবেদনে।
যুবশ্রী প্রকল্প
যুবশ্রী প্রকল্পের আগের নাম ছিল- যুব উৎসাহ প্রকল্প! যা পশ্চিমবঙ্গে ১লা অক্টোবর ২০১৩ সাল থেকে কার্যকর ছিল। পরে এই স্কীমের নাম পরিবর্তন করে যুবশ্রী প্রকল্প রাখা হয়। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল- রাজ্যের পিছিয়ে পড়া বেকার যুবক-যুবতীদের আর্থিক ভাবে সাহায্য করা। এছাড়া, এই স্কীমে আরও কিছু সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। যা ক্রমশ প্রকাশ্য।
যুবশ্রী স্কীমে কি কি সুবিধা পাওয়া যায়?
আর্থিক সহায়তা— এই স্কীমের মূল যে সুবিধা, তা হল বেকার থাকা অবস্থায় ছেলে ও মেয়ে সবাইকে প্রতিমাসে ১৫০০/- টাকা ভাতা দেওয়া হয়। যতদিন না তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে।
কর্মসংস্থান— রাজ্যের যুবশ্রী স্কীমে নাম নথিভুক্ত থাকলে, আবেদনকারী তার স্কিলের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন সরকারি বা বেসরকারি সংস্থায় চাকরি/কাজ পেতে পারে।
প্রশিক্ষন— যুবশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের পক্ষ থেকে, একেবারে বিনামুল্যে বিভিন্ন স্কিল ডেভলপমেন্ট বা দক্ষতা বৃদ্ধি প্রশিক্ষন দেওয়া হয়ে থাকে। যেমন- সফট স্কিল ট্রেনিং, বেসিক IT ট্রেনিং, বেসিক কমিউনিকেশন ট্রেনিং, এবং প্রার্থীর প্রয়োজন বা আগ্রহ অনুযায়ী অন্যান্য দক্ষথি
যুবশ্রী প্রকল্পে আবেদনের যোগ্যতা
- আবেদনকারীকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
- শুধুমাত্র বেকার ছেলেমেয়েরাই এই প্রকল্পে আবেদনযোগ্য।
- যুবশ্রী স্কীমের অফিশিয়াল পোর্টালে Job Seeker হিসেবে নাম নথিভুক্ত থাকতে হবে।
- প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা কমপক্ষে অষ্টম (8th) শ্রেণী পাশ হতে হবে। এছাড়া, মাধ্যমিক/উচ্চমাধ্যমিক/গ্রাজুয়েশ্ন এবং যেকোন শিক্ষাগত যোগ্যতায় আবেদন করা সম্ভব।
- ০১লা এপ্রিল ২০২৫ তারিখ অনুযায়ী প্রার্থীর বয়স নুন্যতম ১৮ বছর থেকে সর্বচ্চ ৪৫ বছরের মধ্যে হতে হবে।
- আবেদনকারীর নামে অন্য কোনো সরকারি আর্থিক সহায়তা (Financial Assistance)/সরকারি লোন (Govt Loan)/সরকারি কাজের ব্যবস্থা (Central Government Sponsored Self-Employment Scheme) থাকলে চলবে না।
- পরিবারের শুধুমাত্র একজন সদস্য এই স্কীমে নাম তুলতে পারবে।
Read More:— শ্রমশ্রী প্রকল্পে পাবে, প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা! আবেদন পদ্ধতি দেখে নাও।
যুবশ্রী প্রকল্পে কিভাবে আবেদন করবে?
দেখো, এটা তোমার সারাজীবন ধরে মাসে মাসে ১৫০০/- টাকা ভাতা পাওয়ার সুযোগ। তাই আবেদন প্রক্রিয়া টা ভালোভাবে বুঝে নাও। কারন, এখানে অনেকে আবেদন করে বসে আছে, কিন্তু তারা ভাতা পাচ্ছে না।
যুবশ্রী প্রকল্পে নাম তোলা এবং প্রতিমাসে ভাতা পাবার জন্য প্রথমে employmentbankwb এই পোর্টালে নাম তুলতে হবে। এই পোর্টালে নাম আসলে তারপরে, যুবশ্রী স্কীমে আবেদন করতে পারব।
এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্কে নাম কিভাবে তুলবে?
প্রথমে employmentbankwb.gov.in এই পোর্টালে গিয়ে Job Seeker হিসেবে নাম তুলতে হয়! এরজন্য অনলাইনে ফর্ম ফিলাপ করতে হয় এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করতে হয়।

আবেদনকারীর এই সমস্ত তথ্য দিয়ে ফর্ম ফিলাপ সম্পূর্ণ করতে হয়—
| Personal Information | Name, Father’s / Mother’s Name, Spouse Name, Sex, Caste, Religion, Marital Status, Date of Birth, Physically Challenged, Whether Ex-serviceman |
| Contact Information | Postal Address, State, District, Pin Code, Exchange, Mobile, E-mail Address, Aadhar number |
| Education Details (শিক্ষাগত যোগ্যতা) | Exam Passed, Name of University/Board/Council, Subject/Trade, Specialization, Year Of Passing, % Marks |
| Language (ভাষা) | Bengali, Hindi, English Or Any Other |
| Physical Measurement (শারিরীক পরিমাপ) | Height, Weight, Chest |
| Upload Photo / CV | Photo+Signature, Biodata |
| Experience Details (কাজের অভিজ্ঞতার তথ্য) | Optional |
| Additional Information (অতিরিক্ত তথ্য) | Proof of Residence, Residence Proof/Id No, Willing to Relocate, Whether BPL, Additional Information |
Note:— পাসপোর্ট সাইজ ছবির উপরে আবেদনকারীর সই করতে হবে, তারপর সেটা 500kb-র মধ্যে আপলোড করতে হবে।
আবেদনকারীর এক কপি বায়োডাটা/CV 200kb-র মধ্যে Doc/Docx ফাইলে আপলোড করতে হবে। ছবি বা PDF আপলোড করলে হবেনা।
কি কি ডকুমেন্ট লাগবে?
আবেদনকারীর ডকুমেন্ট আপলোড করতে হবে, যার সাইজ হবে ২০ থেকে ১০০ কেবির মধ্যে। যেগুলি হল-
- নাম, জন্ম তারিখ প্রমান হিসেবে- মাধ্যমিকের এডমিট কার্ড/মাধ্যমিকের সার্টিফিকেট/ট্রান্সফার বা জন্ম সার্টিফিকেট (যেকোন একটি)।
- রেসিডেন্স বা বাসিন্দার প্রমান হিসেবে- রেশন কার্ড/ভোটার কার্ড/পাসপোর্ট/আধার কার্ড (যেকোন একটি)।
- কাস্ট সার্টিফিকেট বা জাতিগত শংসাপত্র (জেনারেল দের লাগবে না)।
- Pwd হলে তার সার্টিফিকেট (যাদের আছে)।
- শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমান হিসেবে- সর্বচ্চ যোগ্যতার মার্কশিট/ট্রান্সফার সার্টিফিকেট (যেকোন একটি)।
অনলাইনে আবেদন করার পরে
— আবেদনকারী অনলাইনে ফর্ম ফিলাপ সম্পূর্ণ করে একটি একনলেজমেন্ট স্লিপ ডাউনলোড এবং প্রিন্ট করে নেবে। এই স্লিপে আবেদনকারীর একটি টেম্পোরারি নম্বর থাকবে।
— তারপর, নিজের কাছের লোকেশনের এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ অফিসে যেতে হবে সমস্ত ডকুমেন্ট অরিজিনাল ও জেরক্স করে সাথে অবশ্যই একনলেজমেন্ট স্লিপটি নিয়ে যাবে।
— এরপরে, এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ অফিসে একটি ফর্ম ফিলাপ করে জমা দিতে হবে। এখানে ডকুমেন্ট গুলি ভেরিফিকেশন হয়ে যাবে।
— তারপরে, আবেদনকারীকে SMS/মেসেজের মাধ্যমে পার্মানেন্ট আইডি দিয়ে দেবে। ওই আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে আবার- employmentbankwb.gov.in এই পোর্টালে লগইন করতে পারবে।
যুবশ্রী প্রকল্পে আবেদন
— এতক্ষন আমরা এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্কে সফলভাবে নাম রেজিস্ট্রেশন করে নিলাম। এরপরে, যুবশ্রী প্রকল্পে আবেদন করব।
— বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে যুবশ্রী প্রকল্পের আবেদন গ্রহন শুরু হয়। এখানে শুধুমাত্র তারাই এপ্লাই করতে পারে, যাদের অলরেডি এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্কে সফলভাবে নাম রেজিস্ট্রেশন রয়েছে।
— যুবশ্রী প্রকল্পের আবেদন গ্রহন শুরু হলে Annexure-III ফর্ম ফিলাপ করে, অনলাইনেই জমা দিতে হয়।
— এরপরে, যুবশ্রী প্রকল্পের ৪/৫টা ওয়েটিং লিস্ট প্রকাশিত হয়। এই ওয়েটিং লিস্ট থেকে ফাইনাল লিস্ট প্রকাশিত হয়! ওই ফাইনাল লিস্টে যাদের নাম থাকা তারা প্রতিমাসে ১৫০০/- টাকা ভাতা পায়।
— যুবশ্রী প্রকল্পের Annexure-III ফর্ম ২০২৫ সালে এখনও প্রকাশিত হয়নি। বর্তমানে এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্কে পোর্টালে নাম তুলে রাখো।
Note:— যখন যুবশ্রী প্রকল্পের Annexure-III ফর্ম ফিলাপ শুরু হবে আমাদের টেলিগ্রাম অথবা হোয়াটস্যাপ গ্রুপে জানিয়ে দেব। অথবা আমাদের WB Tathya ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও পাবে- SUBSCRIBE.

