Smart CitizenCard in India:— বর্তমানে ভারতের নাগরিকত্ব প্রমাণের বিষয়টি নিয়ে বেশ একটি উদ্বেগ মানুষের মধ্যে কাজ করছে। নাগরিকত্ব প্রমাণ করার জন্য বেশ কিছু তথ্য মানুষকে প্রমাণ স্বরূপ দেখাতে হবে। সারাদিন জুড়ে ভোটার SIR, NRC, CSS এইসব নিয়ে কাজ হচ্ছে।
ভারতের প্রকৃত নাগরিক এবং অন্য দেশ থেকে বেআইনিভাবে আসা নাগরিকদের বাছাই করার জন্য এই প্রক্রিয়া চালু হয়েছে। অনেক রাজ্যে ইতিমধ্যে এই কাজ শুরু হয়ে গেছে। পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী একটি রাজ্যেই ৭০ হাজারের বেশি মানুষকে পুনর্বাসনে (Rehabilitation) নিয়ে যাওয়া হয়েছে কারণ তাদের ভারতের নাগরিকত্ব প্রমাণের উপযুক্ত নথি নেই। পশ্চিমবঙ্গ খুব তাড়াতাড়ি এই কাজ শুরু হতে চলেছে।
স্মার্ট সিটিজেন কার্ড কি?
কেন্দ্র সরকারের দপ্তর থেকে জানা গেছে যে স্মার্ট সিটিজেন কার্ড, এমনই একটি কার্ড— যা থাকলে অন্যান্য পরিচয় পত্র আপনার দরকার হবে না! আপনি যে ভারতের নাগরিক সেটি প্রমাণ করার জন্য। কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে খুব শীঘ্রই এই কার্ড ইস্যু করা হবে।
এতদিন পর্যন্ত আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স এইসব নথি আপনার নাগরিকত্ব প্রমাণ হিসাবে মান্যতা পেতো! কিন্তু যদি আপনার কাছে স্মার্ট সিটিজেন কার্ড থাকে, তাহলে আর কোন অন্য নথি দরকার হবে না। তাই এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি নথি। এটি যদি আপনার কাছে থাকে তাহলে নাগরিকত্ব প্রমাণের ক্ষেত্রে আর কোন দুশ্চিন্তার বিষয় থাকবে না।
স্মার্ট সিটিজেন কার্ড কেমন দেখতে?
এই কার্ডের মধ্যে একটি ডিজিটাল চিপ লাগানো থাকবে, যার মধ্যে আপনার ব্যক্তিগত এবং বায়োমেট্রিক সমস্ত তথ্যাদি থাকবে। এই কার্ডের মধ্যে একটি QR Code দেওয়া থাকবে যা মেশিনের সামনে ধরলে আপনার সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।

যাতে এই কার্ডের ও আপনার ব্যক্তিগত তথ্যের নকল কোন কার্ড — না বানানো যায়! তার জন্য একটি হলোগ্রাম ও মাইক্রোটেক্স থাকবে। এই কার্ডের সঙ্গে একটি লিঙ্কেজের মাধ্যমে আপনার অন্যান্য নথি যেমন আধার কার্ড প্যান কার্ড ভোটার কার্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে।
আপনি ভারতের নাগরিক হলে এই কার্ড আপনি পাবেন এবং সেটি বাধ্যতামূলক। বর্তমানে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে এটিকে বাধ্যতামূলক নতি হিসাবে সংযুক্ত করা হয়েছে, এই কার্ড ইস্যুর বিষয়ে কেন্দ্রকে পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
এই কার্ডে কি কি সুবিধা পাবে?
স্মার্ট সিটিজেনসিপ কার্ড থাকলে আপনি ভারতের নাগরিক এটা ১০০% ও প্রমাণিত হবে। আপনি ভারতের যেখানে খুশি যেতে পারবেন এবং ভারতের নাগরিক প্রমাণ করার ক্ষেত্রে আপনাকে কোন আইনি জটিলতায় পড়তে হবে না।
সরকারি সমস্ত সুযোগ সুবিধা আপনি আইন সিদ্ধ হবে পাবেন। এই কার্ড থাকলে বেআইনি, ঝুঁকিপূর্ণ ও প্রতারণা চক্র থেকে অনেকটা দেশের মানুষকে বাঁচানো যাবে। অন্যান্য নথির সঙ্গে যেহেতু ডিজিটালই এই কার্ড লিঙ্ক থাকবে তাই একটি কার্ডের মাধ্যমে অন্যান্য কার্ডগুলিকে আপনি ব্যবহার করতে পারবেন।
স্মার্ট সিটিজেনশিপ কার্ডের ইস্যু সম্বন্ধে সমালোচনা
বিরোধীদের একাংশের মতামত —
সাধারণ নাগরিক হিসাবে ভারতীয়দের কাছে স্মার্ট কার্ড, সুফল না কুফল সে নিয়ে আপাত দৃষ্টিতে পুরোপুরি স্বচ্ছতা সম্বন্ধে স্পষ্টভাবে কিছু বলা বা বোঝা যাচ্ছে না। বিরোধীদের মতে এই কার্ডের পিছনে সুগোপনে NRC-র মতো বিতর্ক মূলক বিষয়কে ভারতে বাস্তবায়নের জন্য কেন্দ্র সরকার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
এই কার্ড চালু হলে যে সমস্ত প্রান্তিক মানুষ আছেন তাদের কাছে যথাযথ প্রমাণপত্র না থাকার জন্য ভারতীয় নাগরিক হলেও সঠিক প্রমাণের অভাবে তারা বিপদে পড়তে চলেছেন। আবার অনেকের মতে এই বিষয়টি কার্যকরী হলে তথ্যের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
সবশেষে বলা যায় যে, সারা পৃথিবীর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ভারত ও সামনে এগোচ্ছে। ভারতের নাগরিকদের সমস্ত প্রতারণা থেকে বাঁচানোর জন্য এবং দেশকে আরো সুরক্ষিত করার জন্য কেন্দ্র সরকারের এই পদক্ষেপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের নাগরিক হিসাবে আমাদের সবার উচিত এই পদক্ষেপে সরকারকে সাহায্য করা।

