Printing Business:- আজকের দিনে দাঁড়িয়ে ঘরে বসে একাধিক ব্যবসার সুযোগ রয়েছে। তবে যে কোন ব্যবসা বা Business শুরু করার আগে বেশ কয়েকটি চিন্তাভাবনা ব্যবসায়ীদের মনে থেকে যায়। এর মধ্যে প্রথমেই আসে মূলধনের পরিমাণ এবং লাভ ক্ষতির সম্ভাবনা।
তবে এক্ষেত্রে আপনি যদি বাজারে বর্তমানে অধিক মাত্রায় প্রচলিত রয়েছে বা মানুষের নিত্য প্রয়োজন এর দরকার পড়ে থাকে এমন কোন জিনিস নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন, তাহলে আপনার ব্যবসা রমরমিয়ে চলতে থাকবে।
আর এমনই একটি দুর্দান্ত ব্যবসার আইডিয়া হল- Printing Business বা প্রিন্ট করার ব্যবসা। বর্তমানে এই প্রিন্টিং এর ব্যবসার চাহিদা বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই আপনি যদি প্রিন্টিং এর ব্যবসা শুরু করতে পারেন এবং নিজের এলাকায় জনপ্রিয়তা লাভ করেন, তাহলে আপনার কোনভাবেই ক্ষতি হবে না। তাহলে চলুন, বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
টি-শার্ট প্রিন্টের ব্যবসা
বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন মফস্বল এবং শহুরে এলাকায় টি শার্ট প্রিন্টিং এর ব্যবসা ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা লাভ করছে। আসলে এই ব্যবসা শুরু করার জন্য অত্যন্ত কম বিনিয়োগ দরকার হয় এবং উচ্চ চাহিদার কারণে বিপুল পরিমাণে লাভ করতে পারেন ব্যবসায়ীরা।

তাই বুদ্ধি করে সঠিক বিজনেস স্ট্রাটেজি মেন্টেন করে আপনি যদি এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন তাহলে আপনার উন্নতি কেউ আটকাতে পারবেনা। তাই আজকের প্রতিবেদনে এই ব্যবসার সম্পর্কে যাবতীয় টিপস উল্লেখ করা হলো।
টি-শার্ট প্রিন্টিং ব্যবসার সুবিধা
১) এই ব্যবসা শুরু করতে বড় কোন যন্ত্রপাতি বা অধিক পরিমাণে জায়গার প্রয়োজন হয় না।
২) কোন ব্যক্তি যদি নিজের জীবনের প্রথম ব্যবসা শুরু করতে চান, তার জন্য অত্যন্ত কম মূলধনের এই ব্যবসা বেছে নেওয়া যেতে পারে।
৩) এর জন্য কোন অতিরিক্ত দক্ষতা বা পড়াশোনার ডিগ্রীর প্রয়োজন হয় না।
Read More:- চালু থাকছে রান্নার গ্যাসে ৩০০ টাকা ভর্তুকি! কারা পাবেন এই সুবিধা?
৪) বিদ্যালয়, অফিস, কলেজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় কাস্টম টি-শার্ট বর্তমানে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই কারণেই আজকের দিনে অধিক পরিমাণে চাহিদা তৈরি হয়েছে কাস্টমাইজড প্রিন্ট করা টি-শার্টের।
৫) এক্ষেত্রে আপনি আপনার পছন্দমত মজাদার কোট, মোটিভেশনাল বক্তব্য কিংবা বিভিন্ন ডিজাইন প্রিন্ট করে বাজারে বিক্রি করতে পারেন।
৬) নিজের আশেপাশের এলাকায় পরিচিতি তৈরির পাশাপাশি অনলাইনে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সরাসরি গ্রাহকের কাছে পৌঁছে এই ধরনের টি শার্ট বিক্রি করা যেতে পারে।
Printing Business করতে পুঁজি কত লাগবে?
যে কোন ব্যবসার শুরুতেই একটি পুঁজি বা মূলধনের প্রয়োজন হয়। তবে টি-শার্ট প্রিন্টিং ব্যবসার ক্ষেত্রে সেই মূলধন লাভের তুলনায় নিতান্তই অনেক কম। এক্ষেত্রে ব্যবসা শুরুর আগে আপনি কোন প্রিন্টিং কৌশল ব্যবহার করতে চান, সেটি আপনাকে ঠিক করে নিতে হবে। এরপর আপনাকে প্রয়োজনীয় মেশিন এবং কাঁচামাল কিনে সংগ্রহ করে নিতে হবে। এই ব্যবসার কাঁচামাল হিসাবে প্রয়োজন হবে-
হিট প্রেস মেশিন- অত্যন্ত সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করে ছোট স্কেলে হিট প্রেস মেশিন (Heat Press Machine) কিনে নিতে হবে। বর্তমানে এই হিট প্রেস মেশিন এর আনুমানিক মূল্য ১২,০০০-১৮,০০০ টাকার মধ্যে। যেকোনো টি শার্ট এ প্রিন্ট করার জন্য এই মেশিন প্রয়োজন হয়ে থাকে।
কালো বা অন্য যে কোন রঙের টি শার্ট- সাধারণত এই ধরনের টি-শার্টের দাম প্রতি পিস হিসাবে ৮০ টাকা থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।
সাবলিমেশন পেপার- প্রিন্টার ডিজাইন ট্রান্সফার করার জন্য এই ধরনের পেপার বা কাগজের প্রয়োজন হয়। এর প্রতি শিট পিছু ৫ থেকে ১০ টাকা খরচ হয়ে থাকে।
অন্যান্য সরঞ্জাম- উপরে উল্লেখিত জিনিসগুলি প্রিন্টিং ব্যবসা শুরু করার জন্য সবথেকে প্রয়োজনীয়। তবে এর পাশাপাশি ডিজাইন তৈরি করার জন্য আপনি কম্পিউটার, ল্যাপটপ কিংবা মোবাইল ব্যবহার করতে পারেন। পাশাপাশি নিজের ইউনিক ডিজাইন তৈরি করার জন্য Canva বা Photoshop এর মত সফটওয়্যার ব্যবহার করা যেতে পারে।
টি শার্ট প্রিন্টিং ব্যবসার খরচ ও লাভ
সাধারণত প্রাথমিকভাবে টি শার্ট প্রিন্টিং ব্যবসা শুরু করতে হিট প্রেস মেশিন (Heat Press Machine) এর জন্য ১৮,০০০ টাকার কাছাকাছি খরচ হয়ে থাকে। পাশাপাশি অন্যান্য জিনিস, ব্যবহৃত বিদ্যুৎ এবং মার্কেটিং এর জন্য আরো ১০,০০০ টাকা থেকে ১২,০০০ টাকা খরচ হয়। অর্থাৎ সবমিলিয়ে আপনার খরচ প্রায় ৩০,০০০ টাকা।
অপরদিকে আমরা যদি এই ব্যবসার লাভের পরিমাণ লক্ষ্য করি, তাহলে মোট ১০০-২০০ টি টি-শার্ট গড়ে ৩০০ টাকা হিসাবে বিক্রি করতে পারলে রোজগার হয় ৩০,০০০ টাকা থেকে ৬০,০০০ টাকার মধ্যে। এভাবেই মাসে আপনি যতটা পরিমাণ অর্ডার পাবেন তার ওপর নির্ভর করে আপনি রোজগার করতে পারবেন।
প্রিন্টিং ব্যবসার টিপস
বর্তমানে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী এই ব্যবসা নতুন ব্যবসায়ীদের জন্য অনবদ্য বিকল্প হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই প্রোডাক্টের গুণমান আপনাকে বজায় রাখতে হবে এবং চলতি ট্রেন্ড অনুযায়ী জিনিস তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়া বা অনলাইন মাধ্যমে অ্যাডভার্টাইজমেন্ট দিতে হবে। এইভাবেই একটি ছোট্ট ব্যবসার শুরু করে লক্ষ্য লক্ষ্য গ্রাহকের কাছে পৌঁছে গিয়ে প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা রোজগার করে নিতে পারবেন।

